-->

ধর্ম নির্ণয়ে বেদই একমাত্র প্রমাণ; পুরাণ এবং স্মৃতি সহায়ক মাত্র

বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিছু ব্যক্তি প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদকে পাশ কাটিয়ে শুধু পৌরাণিক গ্রন্থ অথবা বিভিন্ন বাবাগুরুদের লেখা ছড়ার বই, গ...

আগে নোবেলটা উদ্ধার কর!


আগে নোবেলটা উদ্ধার কর! ১৯১৩ সালে নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার বছরেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গেয়েছিলেন: "এ মণিহার আমায় নাহি সাজে- এরে পরতে গেলে লাগে, এরে ছিঁড়তে গেলে বাজে॥ কণ্ঠ যে রোধ করে, সুর তো নাহি সরে- ওই দিকে যে মন পড়ে রয়, মন লাগে না কাজে॥ তাই তো বসে আছি, এ হার তোমায় পরাই যদি তবেই আমি বাঁচি। ফুলমালার ডোরে বরিয়া লও মোরে- তোমার কাছে দেখাই নে মুখ মণিমালার লাজে॥" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ত সকল পুরস্কারের ঊর্ধ্বে ছিলেন। নোবেল পুরষ্কার তাঁকে কোন প্রভাবিত করতে পারে নি। তিনি যা ছিলেন তাই আছেন। কিন্তু তাঁর নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার যখন বাঙালি শতবর্ষ উদযাপন করবে। সেই নোবেল পুরষ্কারের শতবর্ষ পালন করতে হলো নোবেল পুরষ্কারবিহীন। বাঙালির জন্যে এর থেকে লজ্জার কি হতে পারে। প্রতিবছর ২৫ বৈশাখে যখন আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন করি, তখন কি সামান্যতম লজ্জা করে না আমাদের? এই পুরষ্কারটি শুধু বাঙালি বা ভারতবর্ষের নয়। এশিয়া মহাদেশের প্রথম নোবেল পুরষ্কার এটি। অথচ এই দুর্লভতম পুরষ্কারটি আমরা রক্ষা করতে পারিনি। অথচ বাঙালি বাঙালি করে পশ্চিমবঙ্গের একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী গোছের মানুষ ভারতবর্ষের অন্যান্য ভাষাভাষীদের সাথে দূরত্ব তৈরি করে ফেলছে। এই দূরত্ব অনেক সময়ে রেষারেষি থেকে নোংরামিতেও পর্যবসিত হচ্ছে। যা শাশ্বত বাঙালি সংস্কৃতি নয়। বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার নির্বাচনে এত বেশি দৃশ্যমান হয়েছে যা বলার মত নয়। অতিরিক্ত বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে অনেক মিথ্যা ইস্যু এবং প্রচারণাও করা হয়েছে। যারা রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্যে দলগতভাবে এই কাজটি করেছে। তাদের মনে রাখতে হবে, বাঙালির পরিচয় শুধু তার ভাষাতেই সীমাবদ্ধ নয়। বাঙালির পরিচয় ভাষার সাথেসাথে শাশ্বত সংস্কৃতির ঘনিভূত রূপ। ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ শান্তিনিকেতন থেকে রবিঠাকুরের নোবেল পুরস্কারের পদক, মানপত্র ও রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত বেশকিছু সামগ্রী বিশ্বভারতীর মিউজিয়াম থেকে চুরি হয়ে যায়৷ চুরি হয়ে যায় কবিগুরুর সোনার পকেট ঘড়ি , তাঁর মৃণালিনী-দেবীর বালুচরি শাড়ি, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহার করা সোনার আংটি ও বিভিন্ন ধরনের রুপোর অলঙ্কারসহ বোলপুরের শান্তিনিকেতনের উত্তরায়ণ সংগ্রহশালা থেকে কবিগুরুর নোবেল পদকসহ ৫৭টি মূল্যবান ব্যবহার্য জিনিস চুরি হয়। সে সময় বামফ্রন্ট ক্ষমতায় ছিলো। বামফ্রন্ট সরকারের সরকারপ্রধান ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভ্রাতুষ্পুত্র। তিনি পারিবারিক ভাবে সাহিত্য সংস্কৃতির সাথে যুক্ত। তিনি এই চুরির ঘটনার তদন্তভার দেন সিবিআইয়ের হাতে। ঘটনার তিনদিন পর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নোবেল চুরির রহস্য ভেদ করতে সিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০০৭ সালে সিবিআই নোবেল পদক উদ্ধার করতে না পেরে তদন্ত গোটার ঘোষণা করে। কিন্তু পরের বছর রাজনৈতিক চাপের মুখে নতুন করে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। কিন্তু, তার পরের বছর আবারও চুরির কিনারা করতে না পারার দায় নিয়ে তদন্ত থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা করে সংস্থাটি।২৬ মার্চ তদন্ত করতে বিশ্বভারতী আসে সিবিআই৷ ২৮ মার্চ কলকাতা হাই কোর্টে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়৷ আদালতের চাপে পড়ে ও দেশের সম্মান বাঁচাতে তদন্তে শুরু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা৷ দীর্ঘ তদন্তের পরেও নোবেলের সন্ধান দিতে পারেনি সিবিআই৷ অবশ্য রবীন্দ্রনাথের নোবেল পদকটি চুরি যাওয়ার পর সুইডেনের নোবেল ফাউন্ডেশনের তরফে পদকের একটি রেপ্লিকা বিশ্বভারতীর হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ দীর্ঘ তদন্তের পর সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে সূত্রের অভাবে মমলা ‘ক্লোজ’ করা দেওয়া হয়৷ আর এভাবেই খাতাবন্দী হয়ে আজও রয়ে গেলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরষ্কার চুরির রহস্য। কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী সহকারী অধ্যাপক, সংস্কৃত বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়


আগে নোবেলটা উদ্ধার কর!

১৯১৩ সালে নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার বছরেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গেয়েছিলেন:
"এ মণিহার আমায় নাহি সাজে-
এরে পরতে গেলে লাগে, এরে ছিঁড়তে গেলে বাজে॥
কণ্ঠ যে রোধ করে, সুর তো নাহি সরে-
ওই দিকে যে মন পড়ে রয়, মন লাগে না কাজে॥
তাই তো বসে আছি,
এ হার তোমায় পরাই যদি তবেই আমি বাঁচি।
ফুলমালার ডোরে বরিয়া লও মোরে-
তোমার কাছে দেখাই নে মুখ মণিমালার লাজে॥"
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ত সকল পুরস্কারের ঊর্ধ্বে ছিলেন। নোবেল পুরষ্কার তাঁকে কোন প্রভাবিত করতে পারে নি। তিনি যা ছিলেন তাই আছেন। কিন্তু তাঁর নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার যখন বাঙালি শতবর্ষ উদযাপন করবে। সেই নোবেল পুরষ্কারের শতবর্ষ পালন করতে হলো নোবেল পুরষ্কারবিহীন। বাঙালির জন্যে এর থেকে লজ্জার কি হতে পারে। প্রতিবছর ২৫ বৈশাখে যখন আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন করি, তখন কি সামান্যতম লজ্জা করে না আমাদের? এই পুরষ্কারটি শুধু বাঙালি বা ভারতবর্ষের নয়। এশিয়া মহাদেশের প্রথম নোবেল পুরষ্কার এটি। অথচ এই দুর্লভতম পুরষ্কারটি আমরা রক্ষা করতে পারিনি। অথচ বাঙালি বাঙালি করে পশ্চিমবঙ্গের একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী গোছের মানুষ ভারতবর্ষের অন্যান্য ভাষাভাষীদের সাথে দূরত্ব তৈরি করে ফেলছে। এই দূরত্ব অনেক সময়ে রেষারেষি থেকে নোংরামিতেও পর্যবসিত হচ্ছে। যা শাশ্বত বাঙালি সংস্কৃতি নয়। বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার নির্বাচনে এত বেশি দৃশ্যমান হয়েছে যা বলার মত নয়। অতিরিক্ত বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে অনেক মিথ্যা ইস্যু এবং প্রচারণাও করা হয়েছে। যারা রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্যে দলগতভাবে এই কাজটি করেছে। তাদের মনে রাখতে হবে, বাঙালির পরিচয় শুধু তার ভাষাতেই সীমাবদ্ধ নয়। বাঙালির পরিচয় ভাষার সাথেসাথে শাশ্বত সংস্কৃতির ঘনিভূত রূপ।
২০০৪ সালের ২৫ মার্চ শান্তিনিকেতন থেকে রবিঠাকুরের নোবেল পুরস্কারের পদক, মানপত্র ও রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত বেশকিছু সামগ্রী বিশ্বভারতীর মিউজিয়াম থেকে চুরি হয়ে যায়৷ চুরি হয়ে যায় কবিগুরুর সোনার পকেট ঘড়ি , তাঁর মৃণালিনী-দেবীর বালুচরি শাড়ি, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহার করা সোনার আংটি ও বিভিন্ন ধরনের রুপোর অলঙ্কারসহ বোলপুরের শান্তিনিকেতনের উত্তরায়ণ সংগ্রহশালা থেকে কবিগুরুর নোবেল পদকসহ ৫৭টি মূল্যবান ব্যবহার্য জিনিস চুরি হয়।
সে সময় বামফ্রন্ট ক্ষমতায় ছিলো। বামফ্রন্ট সরকারের সরকারপ্রধান ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভ্রাতুষ্পুত্র। তিনি পারিবারিক ভাবে সাহিত্য সংস্কৃতির সাথে যুক্ত। তিনি এই চুরির ঘটনার তদন্তভার দেন সিবিআইয়ের হাতে। ঘটনার তিনদিন পর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নোবেল চুরির রহস্য ভেদ করতে সিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০০৭ সালে সিবিআই নোবেল পদক উদ্ধার করতে না পেরে তদন্ত গোটার ঘোষণা করে। কিন্তু পরের বছর রাজনৈতিক চাপের মুখে নতুন করে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। কিন্তু, তার পরের বছর আবারও চুরির কিনারা করতে না পারার দায় নিয়ে তদন্ত থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা করে সংস্থাটি।২৬ মার্চ তদন্ত করতে বিশ্বভারতী আসে সিবিআই৷ ২৮ মার্চ কলকাতা হাই কোর্টে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়৷ আদালতের চাপে পড়ে ও দেশের সম্মান বাঁচাতে তদন্তে শুরু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা৷ দীর্ঘ তদন্তের পরেও নোবেলের সন্ধান দিতে পারেনি সিবিআই৷ অবশ্য রবীন্দ্রনাথের নোবেল পদকটি চুরি যাওয়ার পর সুইডেনের নোবেল ফাউন্ডেশনের তরফে পদকের একটি রেপ্লিকা বিশ্বভারতীর হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ দীর্ঘ তদন্তের পর সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে সূত্রের অভাবে মমলা ‘ক্লোজ’ করা দেওয়া হয়৷ আর এভাবেই খাতাবন্দী হয়ে আজও রয়ে গেলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরষ্কার চুরির রহস্য।
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।
ফেসবুক পোস্ট লিঙ্ক :  আগে নোবেলটা উদ্ধার কর!
ফেসবুক পেজ লিঙ্ক : Shri Kushal Baran Chakraborty | Facebook
মন্তব্যগুলো দেখুনমন্তব্যগুলো লুকান🙁