-->

ধর্ম নির্ণয়ে বেদই একমাত্র প্রমাণ; পুরাণ এবং স্মৃতি সহায়ক মাত্র

বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিছু ব্যক্তি প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদকে পাশ কাটিয়ে শুধু পৌরাণিক গ্রন্থ অথবা বিভিন্ন বাবাগুরুদের লেখা ছড়ার বই, গ...

বর্তমানকালের ভণ্ড গুরুদের জন্য, "ঠেলার নাম বাবাজী" একমাত্র ঔষধ ।

 

একটা বিসিএস ক্যাডার হওয়া যতটা কঠিন, এর থেকেও সহজ বাঙালি হিন্দুর তথাকথিত অবতার হওয়া। শুধুমাত্র কলামূলা খাওয়া দিবান্ধ তেলবাজ কিছু চেলা হলেই হল।কথাগুলো শুনে হঠাৎ সাময়িক খারাপ লাগলেও, গভীর জীবনবোধ দিয়ে আমরা যদি একটু আশেপাশে তাকাই, তাহলেই এর সত্যতা হাড়েহাড়ে টের পাব। সত্যিকারের সাধুসন্তকে বাদ দিলে আমাদের জনপ্রিয় সাধুদের অধিকাংশই আত্মপ্রচার পেতে চায়, দেবদেবীর অবতার হতে চায়, কিন্তু ঘুণাক্ষরেও ভগবানের সেবক হতে চায় না। নিজের অলৌকিকতা একবার কোনমতে সাহস করে প্রকাশ করতে পারলেই হল এবং একটু ভাল করে সংভংচং জানলেই হল। তার পিছনে আমরা বুঝে অথবা না বুঝেই গড্ডালিকা প্রবাহে ছুটতে থাকি। আমার এই ছোট্ট জীবনেই এরকম কত ঘটনা দেখলাম। তবে "ঠেলার নামও বাবাজী"। যদি ঠিকঠাক জায়গা মত প্রতিরোধ করা যায় তবে অনেক ভণ্ডদেরই ভণ্ডামির স্বরূপ বের হয়ে যায়। শুধু সাহস করে আমাদের দাড়িয়ে গেলেই হয়।
২০১৫ সালে কুমিল্লা শহরে দক্ষিণ ঠাকুর পাড়ার শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের পাশে সুজন দাসী নামে এক মহিলা নিজেকে সকল দেবদেবীর মা ভবানী দুর্গা বলে দাবী করে জীবিত পূজা নেয়া শুরু করে। কিছুদিনের মধ্যে তার কিছু অন্ধ ভক্তও জুটে যায়। এদেরকে সম্বল করে সে ব্যক্তিস্বার্থে ধর্ম বিরোধী বিভিন্ন আপত্তিকর কর্মকাণ্ড শুরু করে দেয়।যুগেযুগে দেখা যায় সকল ভণ্ডদের সাথেই একটা মধ্যস্বত্বভোগী জুটে যায়। এরাই মূলত সুজন দাসির মত কাউকে না কাউকে সামনে রেখে ধর্মব্যবসাটা করে। কুমিল্লা শহরের মৃদুল দাস তেমনি একজন। তার সহযোগিতায় সুজন দাসী নিজেকে সকল দেব-দেবীর মা ভবানী দুর্গা বলে প্রচার চালাতে থাকেন। হিন্দুদের যেহেতু প্রকৃত ধর্মীয় জ্ঞানের চর্চা কম, তাই তাদের কনফিউজড করা পৃথিবীর সহজ একটি কাজ। সুজন দাসির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অনেক হিন্দুরাই সংশয়ে পড়ে যান। তবে অধিকাংশই ভণ্ডামি ব্যবসার বিষয়টি বুঝতে পারেন এবং ক্ষুব্ধ হন। সজন দাসিকে সাপোর্ট দেয় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা। তাদের প্রভাবে স্থানীয় থানার পুলিশ সুজন দাসির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে না। বরং এক অজানা রহস্যময় আচরণ করে।
একটা বিসিএস ক্যাডার হওয়া যতটা কঠিন, এর থেকেও সহজ বাঙালি হিন্দুর তথাকথিত অবতার হওয়া। শুধুমাত্র কলামূলা খাওয়া দিবান্ধ তেলবাজ কিছু চেলা হলেই হল।কথাগুলো শুনে হঠাৎ সাময়িক খারাপ লাগলেও, গভীর জীবনবোধ দিয়ে আমরা যদি একটু আশেপাশে তাকাই, তাহলেই এর সত্যতা হাড়েহাড়ে টের পাব। সত্যিকারের সাধুসন্তকে বাদ দিলে আমাদের জনপ্রিয় সাধুদের অধিকাংশই আত্মপ্রচার পেতে চায়, দেবদেবীর অবতার হতে চায়, কিন্তু ঘুণাক্ষরেও ভগবানের সেবক হতে চায় না। নিজের অলৌকিকতা একবার কোনমতে সাহস করে প্রকাশ করতে পারলেই হল এবং একটু ভাল করে সংভংচং জানলেই হল। তার পিছনে আমরা বুঝে অথবা না বুঝেই গড্ডালিকা প্রবাহে ছুটতে থাকি। আমার এই ছোট্ট জীবনেই এরকম কত ঘটনা দেখলাম। তবে "ঠেলার নামও বাবাজী"। যদি ঠিকঠাক জায়গা মত প্রতিরোধ করা যায় তবে অনেক ভণ্ডদেরই ভণ্ডামির স্বরূপ বের হয়ে যায়। শুধু সাহস করে আমাদের দাড়িয়ে গেলেই হয়। ২০১৫ সালে কুমিল্লা শহরে দক্ষিণ ঠাকুর পাড়ার শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের পাশে সুজন দাসী নামে এক মহিলা নিজেকে সকল দেবদেবীর মা ভবানী দুর্গা বলে দাবী করে জীবিত পূজা নেয়া শুরু করে। কিছুদিনের মধ্যে তার কিছু অন্ধ ভক্তও জুটে যায়। এদেরকে সম্বল করে সে ব্যক্তিস্বার্থে ধর্ম বিরোধী বিভিন্ন আপত্তিকর কর্মকাণ্ড শুরু করে দেয়।যুগেযুগে দেখা যায় সকল ভণ্ডদের সাথেই একটা মধ্যস্বত্বভোগী জুটে যায়। এরাই মূলত সুজন দাসির মত কাউকে না কাউকে সামনে রেখে ধর্মব্যবসাটা করে। কুমিল্লা শহরের মৃদুল দাস তেমনি একজন। তার সহযোগিতায় সুজন দাসী নিজেকে সকল দেব-দেবীর মা ভবানী দুর্গা বলে প্রচার চালাতে থাকেন। হিন্দুদের যেহেতু প্রকৃত ধর্মীয় জ্ঞানের চর্চা কম, তাই তাদের কনফিউজড করা পৃথিবীর সহজ একটি কাজ। সুজন দাসির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অনেক হিন্দুরাই সংশয়ে পড়ে যান। তবে অধিকাংশই ভণ্ডামি ব্যবসার বিষয়টি বুঝতে পারেন এবং ক্ষুব্ধ হন। সজন দাসিকে সাপোর্ট দেয় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা। তাদের প্রভাবে স্থানীয় থানার পুলিশ সুজন দাসির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে না। বরং এক অজানা রহস্যময় আচরণ করে। সুজন দাসি  সুজন দাসির বিষয়টি নিয়ে জেলার বিরক্ত হিন্দু সম্প্রদায় শ্রীশ্রীরাজরাজেশ্বরী কালীবাড়ীতে মিলিত হয়ে এ অশাস্ত্রীয় কুরুচিপূর্ণ হীন কর্মকাণ্ড থেকে তাকে বিরত করতে প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করে। হিন্দু জনসাধারণের সাথে সাথে সুজন দাসীর মা-বাবাও যুক্ত হন। তারা বলেন, তাদের মেয়ে তাদের এলাকাতেও একই ধরনের কর্মকাণ্ড শুরু করেও সুবিধা করতে পারেনি। সুজন দাসি নিজের আপন জ্যাঠতুতো ভাইয়ের সাথে দৈহিক সম্পর্কে জরিয়ে পরায়, তার মা-বাবা সহ পরিবারের সবাই তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে তার সাথে সকল সম্পর্ক ছেদ করে দেয়।এরপর সুজন দাসী তার কথিত স্বামীসহ নরসিংদী শহরে গিয়ে একই প্রকারের ভণ্ডামি করতে থাকে এবং সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও জেলে প্রেরণ করে। জেল থেকে বের হয়ে এসে সে একইভাবে কুমিল্লাতে ঘাটি গেড়ে কুরুচিপূর্ণ অশাস্ত্রীয় নিন্দনীয় কাজগুলো ধারাবাহিক করা শুরু করে।দুর্গাপূজা উপলক্ষে সুজন দাসি নিজেকে জগন্মাতা দুর্গাদেবী রূপে ঘোষণা করে। সে নিজেকে দুর্গা সাজিয়ে পূজার আয়োজন করে। সারা কুমিল্লাব্যাপী ব্যাপক প্রচারণাও চালানো হয়। ঘটনার পরম্পরায় ভণ্ড ভবানী সুজন দাসীকে দেবীদুর্গার প্রতিকৃতি বিকৃত করা, সনাতন ধর্মের দেবদেবীদের প্রতি বিরূপ মন্তব্য ও ধর্ম বিনষ্টকারী পূজা কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কুমিল্লার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে তীব্র প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদ সমাবেশগুলি থেকে ভণ্ড ভবানীকে গ্রেফতারের দাবিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।এর জেরে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ ঠাকুরপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে শ্রীকৃষ্ণ মন্দির থেকে প্রতারক সুজন দাসি সহ তার সঙ্গী ৪ জনকে গ্রেফতার করে। ১৬ জনকে আসামী করে দক্ষিণ ঠাকুরপাড়া পালপাড়া সংলগ্ন জনৈক দুলাল চন্দ্র দাস বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। বর্তমানে স্বঘোষিত সর্বশক্তিমান দেবী বহুদিন জেলের ভাত খেয়ে বর্তমানে কুমিল্লার হিন্দু উকিলদের হাতপা ধরে বেড়াচ্ছেন শুধুমাত্র মামলার হাত থেকে বাঁচার প্রত্যাশায়।এভাবেই অন্ধকারে চিরতরে নিমজ্জিত হয়ে যায় এক মাতাজীর দেবী হবার বাসনা।শুধুমাত্র "ঠেলার নাম বাবাজী" নামক মহৌষধ প্রয়োগের ফলে। বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় যেভাবে গত দেড়শত বছরে ভগবানের ফ্যাক্টরি খুলে বসেছে, এবং ফ্যাক্টরি দিয়ে এত শতশত ভগবান, অবতারের জন্ম হয়েছে তা সত্যি ভাববার বিষয়ই বটে।এর সমাধানকল্পে হিন্দু তরুণ-যুবক সম্প্রদায় যদি কুসংস্কার মুক্ত হয়ে নির্ভীক চিত্তে এগিয়ে আসে, তবেই হয়ত এর একটা সমাধান আসতে পারে ; নচেৎ আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছে আরো বড় সর্বনাশা অন্ধকার। যে সুজন দাসী নিজেকে দেবী দাবি করে ক্যান্সার সারানোর দাবি সহ অসংখ্য অলৌকিকত্বের দাবি করেছে, সেই ধরা পরে আজ কুমিল্লার উকিলদের হাতপা ধরছে শুধু মামলার হাত থেকে বাঁচার জন্যে। এর বিরুদ্ধে যদি কুমিল্লার সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ না করত, তাহলে এতদিনে দেখা যেত সুজন দাসির নামেও মন্দির হয়ে, সেখানে তার মর্মর মূর্তি পূজিত হচ্ছে। ভাবতে অবাক লাগে, আমরা এত বোকা কেন? আমাদের আশেপাশে এমন সুজন দাসিদের অন্ত নেই। ভারতের বিভিন্ন চ্যানেলে বিভিন্ন অলৌকিক শক্তিসম্পন্ন মা বাবারা নিজেদের যেভাবে প্রচার করে, তাতে মনে হয় ভারতের পাকিস্তানের সাথে সমস্যা, চিনের সাথে সমস্যা সহ সকল সমস্যার সমাধান তো এরাই করতে পারে। সৈন্যেরতো কোন প্রয়োজনই নেই। একটা সম্প্রদায়ের মানুষ যদি এত নিজের ব্যক্তিপ্রচার নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তাহলে তারা ধর্মের প্রচার, সম্প্রদায়ের প্রচার কখন করবে? অন্য ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে আমরা দেখি, সুফি পীর ফকির দরবেশরা যারা লাখোলাখো মানুষকে তাদের ধর্মে ধর্মান্তরিত করেছে, তাদের ছবি পর্যন্ত কারো কাছে নেই। শুধু তাদের নামটি আছে। তাদের থেকেও আমাদের শেখার আছে। একটা সম্প্রদায়ের যদি এত পথেঘাটে অবতার থাকে, তবে সে সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হবে না কেন? তবে ঈশ্বরের প্রতি বেদবেদান্তের প্রতি বিশ্বাস রেখে "ঠেলার নাম বাবাজী" নামক মহৌষধের প্রয়োগ যদি আমরা মাঝেমধ্যে করতে পারি তবে আগামীতে ভারতবর্ষের কথা আমরা বলতে পারিনা; কিন্তু বাংলাদেশে আর ভণ্ড অবতারের জন্ম হবে না। আমাদেরও আর রাস্তা থেকে লোক ধরে এনে, যাকে খুশী তাকে আর পূজা করতে হবে না। আমরা স্বয়ং পরমেশ্বরের শরণেই থাকতে পারব। আমাদের মনে রাখতে হবে, কলিযুগে হিন্দু শাস্ত্রমতে অবতার মাত্র দুইজন। কলির প্রথম পাদে আসবেন বুদ্ধ অবতার এবং কলিযুগের শেষ পাদে আসবেন কল্কি অবতার। অর্থাৎ আগামীতে শাস্ত্রমতে অবতাররূপে একজনই আসবেন, তিনি হলেন কল্কি অবতার।  ততঃ কলৌ সম্প্রবৃত্তে সম্মোহায় সুরদ্বিষাম্।  বুদ্ধো নাম্নাজনসুতঃ কীকটেষু ভবিষ্যতি৷৷ অথাসৌ যুগসংধ্যায়াং দস্যুপ্রায়েষু রাজসু।  জনিতা বিষ্ণুযশসো নাম্না কল্কির্জগৎপতিঃ৷৷ (শ্রীমদ্ভাগবত:১.৩.২৪-২৫) "এরপর কলিযুগ এসে গেলে মগধদেশে দেবদ্বেষী দানবদের মোহিত করার জন্য অজনের পুত্ররূপে বুদ্ধাবতার অবতীর্ণ হবেন।  এর অনেক পরে যখন কলির শেষপাদে কলিযুগের যখন অবসান হয়ে আসবে এবং রাজারা সব দস্যুভাবাপন্ন হয়ে যাবে তখন জগৎপালক ভগবান বিষ্ণুযশার গৃহে কল্কি অবতার রূপে অবতীর্ণ হবেন।" বর্তমানে চলছে কলিযুগের প্রথম পাদ। শেষপাদে অর্থাৎ আজ থেকে তিনলক্ষ একানব্বই হাজার বছর পরে ভগবান কল্কি অবতার রূপে আসবেন হিমালয়ের পাদদেশে সম্ভলপুর নামক স্থানে। তাই ভবিষ্যৎ অবতার নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, আমরা বেদবেদান্তের শরণে থাকি এবং জাতিগঠন করি। আসেপাশে সুজন দাসির মত ভণ্ডদের পেলে বিভ্রান্ত না হয়ে তাদের কল্যাণার্থে তাদের একটু যথাসম্ভব, "ঠেলার নাম বাবাজী" ওষুধ প্রয়োগ করি। এ মহৌষধে দেখবেন সব ঠিকঠাক হয়ে অবতার দেবদেবী হওয়ায় রোগও তাদের ভাল হয়ে যাবে। পূর্বে এ ওষুধের ব্যবহার না করাতে আজও কত ভণ্ড, অবতার নাম ধারণ করে মন্দিরের বেদিতে মূর্তি হয়ে পূজা নিচ্ছে। এর খোঁজ কয়জনেই বা রাখে? শ্রীকুশল বরণ চক্রবর্ত্তী সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ। ফেসবুক পোস্ট লিঙ্ক : বর্তমানকালের ভণ্ড গুরুদের জন্য, "ঠেলার নাম বাবাজী" একমাত্র ঔষধ  ফেসবুক পেজ লিঙ্ক :  Shri Kushal Baran Chakraborty | Facebook
সুজন দাসির বিষয়টি নিয়ে জেলার বিরক্ত হিন্দু সম্প্রদায় শ্রীশ্রীরাজরাজেশ্বরী কালীবাড়ীতে মিলিত হয়ে এ অশাস্ত্রীয় কুরুচিপূর্ণ হীন কর্মকাণ্ড থেকে তাকে বিরত করতে প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করে। হিন্দু জনসাধারণের সাথে সাথে সুজন দাসীর মা-বাবাও যুক্ত হন। তারা বলেন, তাদের মেয়ে তাদের এলাকাতেও একই ধরনের কর্মকাণ্ড শুরু করেও সুবিধা করতে পারেনি। সুজন দাসি নিজের আপন জ্যাঠতুতো ভাইয়ের সাথে দৈহিক সম্পর্কে জরিয়ে পরায়, তার মা-বাবা সহ পরিবারের সবাই তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে তার সাথে সকল সম্পর্ক ছেদ করে দেয়।এরপর সুজন দাসী তার কথিত স্বামীসহ নরসিংদী শহরে গিয়ে একই প্রকারের ভণ্ডামি করতে থাকে এবং সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও জেলে প্রেরণ করে। জেল থেকে বের হয়ে এসে সে একইভাবে কুমিল্লাতে ঘাটি গেড়ে কুরুচিপূর্ণ অশাস্ত্রীয় নিন্দনীয় কাজগুলো ধারাবাহিক করা শুরু করে।দুর্গাপূজা উপলক্ষে সুজন দাসি নিজেকে জগন্মাতা দুর্গাদেবী রূপে ঘোষণা করে। সে নিজেকে দুর্গা সাজিয়ে পূজার আয়োজন করে। সারা কুমিল্লাব্যাপী ব্যাপক প্রচারণাও চালানো হয়। ঘটনার পরম্পরায় ভণ্ড ভবানী সুজন দাসীকে দেবীদুর্গার প্রতিকৃতি বিকৃত করা, সনাতন ধর্মের দেবদেবীদের প্রতি বিরূপ মন্তব্য ও ধর্ম বিনষ্টকারী পূজা কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কুমিল্লার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে তীব্র প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদ সমাবেশগুলি থেকে ভণ্ড ভবানীকে গ্রেফতারের দাবিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।এর জেরে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ ঠাকুরপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে শ্রীকৃষ্ণ মন্দির থেকে প্রতারক সুজন দাসি সহ তার সঙ্গী ৪ জনকে গ্রেফতার করে। ১৬ জনকে আসামী করে দক্ষিণ ঠাকুরপাড়া পালপাড়া সংলগ্ন জনৈক দুলাল চন্দ্র দাস বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে।
বর্তমানে স্বঘোষিত সর্বশক্তিমান দেবী বহুদিন জেলের ভাত খেয়ে বর্তমানে কুমিল্লার হিন্দু উকিলদের হাতপা ধরে বেড়াচ্ছেন শুধুমাত্র মামলার হাত থেকে বাঁচার প্রত্যাশায়।এভাবেই অন্ধকারে চিরতরে নিমজ্জিত হয়ে যায় এক মাতাজীর দেবী হবার বাসনা।শুধুমাত্র "ঠেলার নাম বাবাজী" নামক মহৌষধ প্রয়োগের ফলে। বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় যেভাবে গত দেড়শত বছরে ভগবানের ফ্যাক্টরি খুলে বসেছে, এবং ফ্যাক্টরি দিয়ে এত শতশত ভগবান, অবতারের জন্ম হয়েছে তা সত্যি ভাববার বিষয়ই বটে।এর সমাধানকল্পে হিন্দু তরুণ-যুবক সম্প্রদায় যদি কুসংস্কার মুক্ত হয়ে নির্ভীক চিত্তে এগিয়ে আসে, তবেই হয়ত এর একটা সমাধান আসতে পারে ; নচেৎ আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছে আরো বড় সর্বনাশা অন্ধকার। যে সুজন দাসী নিজেকে দেবী দাবি করে ক্যান্সার সারানোর দাবি সহ অসংখ্য অলৌকিকত্বের দাবি করেছে, সেই ধরা পরে আজ কুমিল্লার উকিলদের হাতপা ধরছে শুধু মামলার হাত থেকে বাঁচার জন্যে। এর বিরুদ্ধে যদি কুমিল্লার সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ না করত, তাহলে এতদিনে দেখা যেত সুজন দাসির নামেও মন্দির হয়ে, সেখানে তার মর্মর মূর্তি পূজিত হচ্ছে। ভাবতে অবাক লাগে, আমরা এত বোকা কেন? আমাদের আশেপাশে এমন সুজন দাসিদের অন্ত নেই। ভারতের বিভিন্ন চ্যানেলে বিভিন্ন অলৌকিক শক্তিসম্পন্ন মা বাবারা নিজেদের যেভাবে প্রচার করে, তাতে মনে হয় ভারতের পাকিস্তানের সাথে সমস্যা, চিনের সাথে সমস্যা সহ সকল সমস্যার সমাধান তো এরাই করতে পারে। সৈন্যেরতো কোন প্রয়োজনই নেই। একটা সম্প্রদায়ের মানুষ যদি এত নিজের ব্যক্তিপ্রচার নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তাহলে তারা ধর্মের প্রচার, সম্প্রদায়ের প্রচার কখন করবে? অন্য ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে আমরা দেখি, সুফি পীর ফকির দরবেশরা যারা লাখোলাখো মানুষকে তাদের ধর্মে ধর্মান্তরিত করেছে, তাদের ছবি পর্যন্ত কারো কাছে নেই। শুধু তাদের নামটি আছে। তাদের থেকেও আমাদের শেখার আছে।
একটা সম্প্রদায়ের যদি এত পথেঘাটে অবতার থাকে, তবে সে সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হবে না কেন? তবে ঈশ্বরের প্রতি বেদবেদান্তের প্রতি বিশ্বাস রেখে "ঠেলার নাম বাবাজী" নামক মহৌষধের প্রয়োগ যদি আমরা মাঝেমধ্যে করতে পারি তবে আগামীতে ভারতবর্ষের কথা আমরা বলতে পারিনা; কিন্তু বাংলাদেশে আর ভণ্ড অবতারের জন্ম হবে না। আমাদেরও আর রাস্তা থেকে লোক ধরে এনে, যাকে খুশী তাকে আর পূজা করতে হবে না। আমরা স্বয়ং পরমেশ্বরের শরণেই থাকতে পারব। আমাদের মনে রাখতে হবে, কলিযুগে হিন্দু শাস্ত্রমতে অবতার মাত্র দুইজন। কলির প্রথম পাদে আসবেন বুদ্ধ অবতার এবং কলিযুগের শেষ পাদে আসবেন কল্কি অবতার। অর্থাৎ আগামীতে শাস্ত্রমতে অবতাররূপে একজনই আসবেন, তিনি হলেন কল্কি অবতার।
ততঃ কলৌ সম্প্রবৃত্তে সম্মোহায় সুরদ্বিষাম্।
বুদ্ধো নাম্নাজনসুতঃ কীকটেষু ভবিষ্যতি৷৷
অথাসৌ যুগসংধ্যায়াং দস্যুপ্রায়েষু রাজসু।
জনিতা বিষ্ণুযশসো নাম্না কল্কির্জগৎপতিঃ৷৷
(শ্রীমদ্ভাগবত:১.৩.২৪-২৫)
"এরপর কলিযুগ এসে গেলে মগধদেশে দেবদ্বেষী দানবদের মোহিত করার জন্য অজনের পুত্ররূপে বুদ্ধাবতার অবতীর্ণ হবেন।
এর অনেক পরে যখন কলির শেষপাদে কলিযুগের যখন অবসান হয়ে আসবে এবং রাজারা সব দস্যুভাবাপন্ন হয়ে যাবে তখন জগৎপালক ভগবান বিষ্ণুযশার গৃহে কল্কি অবতার রূপে অবতীর্ণ হবেন।"
বর্তমানে চলছে কলিযুগের প্রথম পাদ। শেষপাদে অর্থাৎ আজ থেকে তিনলক্ষ একানব্বই হাজার বছর পরে ভগবান কল্কি অবতার রূপে আসবেন হিমালয়ের পাদদেশে সম্ভলপুর নামক স্থানে। তাই ভবিষ্যৎ অবতার নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, আমরা বেদবেদান্তের শরণে থাকি এবং জাতিগঠন করি। আসেপাশে সুজন দাসির মত ভণ্ডদের পেলে বিভ্রান্ত না হয়ে তাদের কল্যাণার্থে তাদের একটু যথাসম্ভব, "ঠেলার নাম বাবাজী" ওষুধ প্রয়োগ করি। এ মহৌষধে দেখবেন সব ঠিকঠাক হয়ে অবতার দেবদেবী হওয়ায় রোগও তাদের ভাল হয়ে যাবে। পূর্বে এ ওষুধের ব্যবহার না করাতে আজও কত ভণ্ড, অবতার নাম ধারণ করে মন্দিরের বেদিতে মূর্তি হয়ে পূজা নিচ্ছে। এর খোঁজ কয়জনেই বা রাখে?
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।
মন্তব্যগুলো দেখুনমন্তব্যগুলো লুকান🙁