যার থেকে এক অক্ষর পর্যন্ত শিক্ষা লাভ করা হয়, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত। মানুষের প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শিক্ষায় নতুন নতুন ভাবে জন্ম হয়। কিন্তু বর্তমানে অকৃতজ্ঞ একটি রোগে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, মানুষ যাদের থেকে প্রতিনিয়ত সুযোগ পেলে তাদের সামান্যতম অসম্মান করতে দ্বিধাবোধ করে না। বিষয়টি দুঃখজনক এবং ভয়াবহ। এই কারণে বিদ্যাও আত্তীকরণ হয় না। প্রতিনিয়ত যা শেখে, তাই আবার ভুলে যায়। বিদ্যা দেহের মধ্যে পরিপুষ্ট হয় না। এ কারণেই অত্রিসংহিতায় বলা হয়েছে, কোন শিক্ষা গুরু যদি শিষ্যকে এক অক্ষরের শিক্ষা প্রদান করেন, তবে তার প্রতি আমৃত্যু কৃতজ্ঞ থাকতে হয়। শ্লোকটি অত্রিসংহিতার সাথে সাথে চাণক্য শ্লোকেও পাওয়া যায়। অর্থাৎ শিক্ষাগুরুর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকার বিষয়টি শাস্ত্রের একাধিক স্থানেই রয়েছে।বাল্যকালে মায়ের দুধপানের ঋণ যেমন কোনদিন শোধ হয় না; পিতার পরিপোষণের ঋণ যেমন পরিশোধ হয় না ; ঠিক তেমনি শিক্ষা গুরুর শিক্ষার ঋণ কখনো পরিশোধ হয় না। জগতে এমন কোন দ্রব্য নেই, যে গুরুর শিক্ষার সমমুল্য হিসেবে তা শিক্ষা গুরুকে প্রদান করে ঋণমুক্তি লাভ করা যায়।
একমপ্যক্ষরং যস্তু গুরুঃ শিষ্যে নিবেদয়েৎ।
পৃথিব্যাং নাস্তি তদ্দ্রব্যং যদ্দত্ত্বা হ্যনৃণী ভবেং ॥
একাক্ষরং প্রদাতারং যো গুরুং নাভিমন্যতে ।
শুনাং যোনিশতং গত্বা চাণ্ডালেষ্বপি জায়তে ॥
(অত্রিসংহিতা: ৯-১০)
"গুরু যদি শিষ্যকে এক অক্ষরও শিখিয়ে থাকেন, তথাপি, পৃথিবীতে এমন কোন দ্রব্য নেই, যা সেই শিক্ষা গুরুকে অর্পণ করে শিষ্য ঋণমুক্ত হতে পারে। একাক্ষরের শিক্ষা গুরুকেও যে ব্যক্তি সম্মানিত করে না, সে শতবার কুকুর হয়ে জন্ম গ্রহণ করে, পরবর্তীতে চণ্ডালত্ব প্রাপ্ত হয় বা পতিত হয়।"
একাক্ষর শিক্ষা প্রদানকারী গুরুকেও যে ব্যক্তি সম্মানিত করে না, অত্রিসংহিতায় তাকে তীব্রভাবে নিন্দা জানানো হয়েছে। সাথে এটাও বলা হয়েছে, সেই অকৃতজ্ঞ অপরাধী ব্যক্তি শতবার কুকুর জন্ম লাভ করে পরবর্তীতে চণ্ডালত্ব প্রাপ্ত হয়। এখানে চণ্ডাল বলতে কোন জাতপাত বোঝানো হয়নি। শ্লোকে চণ্ডাল বলতে পতিত ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে। শিক্ষা গুরুর প্রতি কৃতজ্ঞতাকারী সেই চণ্ডাল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র কর্মানুসারে চতুর্বর্ণের যে কোন বর্ণের হতে পারে।
শিক্ষা গুরুর সাথে যে অকৃতজ্ঞতা করতে নেই, এ বিষয়টি আমরা কুমারিল ভট্টের জীবনে পাই। বৌদ্ধরাজশক্তির প্রভাবে বৈদিক ধর্মাবলম্বীদের এক ভয়ংকর দুর্দিন উপস্থিত হয়। সেই দুর্দিন অপনোদনে অগ্রগামী পুরুষ হলেন কুমারিল ভট্ট। তাঁর অসমাপ্ত কর্ম সমাপ্ত করে বৈদিক বিজয় ডিণ্ডিম দিকেদিকে ছড়িয়ে দেন শঙ্করাচার্য।কুমারিল ভট্টের দক্ষিণ ভারতের চোলদেশে জন্ম হয়। বৈদিকধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠিত তিনি প্রধান সেনাপতির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তিনি বৌদ্ধ-জৈন প্রভৃতি ভারতের যাবতীয় অবৈদিক ধর্মাবলম্বিগণকে বিচারে পরাজিত করে তাদের মতাদর্শ খণ্ডন করে বৈদিকধর্মের পুনসংস্থাপন করেন। তিনি ছিলেন বৈদিক কর্মকাণ্ডের অনুসারী। বাল্যকাল থেই তিনি বেদানুরাগী ছিলেন এবং পরে একজন প্রধান বেদজ্ঞ পণ্ডিত হইয়া উঠেন। অসামান্য বুদ্ধিমান বৃদ্ধ প্রভাকর মীমাংসাদর্শনের শবরভাষ্যের উপর যে বৃত্তি করিয়াছিলেন, কুমারিল ক্রমে এমনই পণ্ডিত হন যে, তাঁহারও দোষ প্রদর্শন করেন। মীমাংসায় এখন কুমারিল ভট্ট প্রমাণ বলিয়া বিবেচিত হন।
প্রসিদ্ধ বৌদ্ধ-নৈয়ায়িক ধর্মকীর্তির খুল্লতাত ছিলেন কুমারিল ভট্ট। ধর্মকীর্তির জন্মভূমি ছিল চোলরাজ্যের অন্তর্গত ত্রিমলয় নামক স্থানে। সম্ভবতঃ ইহা তাঁহারও জন্মস্থান। ধর্মকীর্তির পিতা পরিব্রাজক করুনন্দ ছিলেন কুমারিল ভট্টের ভাই। ধর্মকীর্তি ১৮ বৎসর বয়সের মধ্যে বেদ বেদাঙ্গ ব্যাকরণ প্রভৃতি সর্বশাস্ত্র পারগামী হন। ইনি শাস্ত্রজ্ঞানের জন্য কুমারিলের শিষ্য হন। কিন্তু বৌদ্ধধর্মে আকৃষ্ট হইয়া তাড়িত হন ও মগধে আসেন। এখানে আসিয়া প্রসিদ্ধ বৌদ্ধগুরু ধর্মপালের শিষ্য হন। ধর্মকীর্তি অনেক গ্রন্থ রচনা করেন। এর মধ্যে প্রসিদ্ধ গ্রন্থ হল:১. প্রমাণবাতির্ককারিকা, ইহা দিঙনাগের প্রমাণসমুচ্চয়ের খণ্ডন, ২. প্রমাণ বার্তিকবৃত্তি, ৩. প্রমাণবিনিশ্চয়, ৪. ন্যায়বিন্দু, ৫. হেতুবিন্দুবিবরণ, ৬. তর্কন্যায় বা বাদন্যায়, ৭.সন্তানান্তরাসিদ্ধি, ৮. সম্বন্ধপরীক্ষা ও ৯.সম্বন্ধপরীক্ষাবৃত্তি।
ধর্মপাল কাঞ্চীর অধিবাসী ছিলেন। সেখানের এক মন্ত্রীর জ্যেষ্ঠপুত্র ছিলেন। সন্ন্যাসী হয়ে তিনি মগধের নালন্দায় চলে গিয়ে, পরবর্তীতে নালান্দার মঠাধ্যক্ষ হন। ধর্মপালের বহু গ্রন্থ বিখ্যাত গ্রন্থ রয়েছে। এরমধ্যে প্রধান হল: ১. আলম্বনপ্রত্যয়ধ্যানশাস্ত্রব্যাখ্যা, ২.বিদ্যামাত্রসিদ্ধিশাস্ত্রব্যাখ্যা ৩. সৎশাস্ত্রবৈপুলব্যাখ্যা। পূর্ববঙ্গের অধিবাসী শীলভদ্র ছিলেন, তাঁর এক প্রসিদ্ধ শিষ্য। ধর্মপালের নিকট হইতে বৌদ্ধমত শিক্ষা করে নিজ চোলদেশে প্রত্যাবর্তন করে ধর্মকীর্তি কুমারিলকে বিচারে পরাজিত করেন। পণ-অনুসারে কুমারিল ভট্ট প্রচণ্ড অনিচ্ছায় বৌদ্ধ মত গ্রহণে বাধ্য হন।
ধর্মকীর্তির নিকট পরাজিত হয়ে কুমারিল ভট্ট নালন্দা বিহারে এসে ধর্মপালের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ধর্মপালের কাছে বৌদ্ধ ন্যায়শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। কিন্তু কুমারিল ভট্টের অন্তর জুড়ে রইলো বেদ। কয়েক বছরের মধ্যে কুমারিল ভট্টের শিক্ষা সমাপ্ত হয়। এমনি সময়ে একদিন বৌদ্ধগুরু সভামধ্যে শাস্ত্রব্যাখ্যা করছিলেন। অনেক শ্রোতৃবর্গ এবং কুমারিল ভট্ট প্রভৃতি বহু শিষ্য সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন। বৌদ্ধগুরু শাস্ত্রব্যাখ্যা করিতে করিতে ভীষণভাবে বেদের নিন্দায় মুখর হয়ে গেলেন। সর্বসমক্ষে এভাবে বেদের নিন্দা দেখে, কুমারিল ভট্ট অত্যন্ত ব্যথিত হৃদয়ে অধোবদনে শুনছিলেন। কিন্তু পর্যায়ক্রমে বেদনিন্দা তাঁর কাছে অসহ্য হয়ে উঠল। তিনি আর চোখের জল সংবরণ করতে পারলেন না। চোখের জলে তাঁর পরিধেয় বসন ভিজে গেল। পার্শ্ববর্তী ভিক্ষু একজন বিষয়টি লক্ষ্য করলেন। তিনি বৌদ্ধগুরুকে বিষয়টি প্রকাশ করে দিলেন।তিনি একটু বিরক্ত হয়ে কুমারিল ভট্টকে কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, আমার মনে হচ্ছে—আপনার বেদের উপর শ্রদ্ধা এখনও যায় নাই এবং আপনি ভান করিয়া বৌদ্ধ সেজে আমাদের বিদ্যা গ্রহণ করছেন।কুমারিল ভট্ট তাঁর বৌদ্ধ শিক্ষা গুরুরবাক্যে মর্মাহত হলেন। তাঁর ব্যথিত হলেও তিনি বিনীতভাবে বললেন—আপনি বেদবিষয়ে অযথা নিন্দাবাদ করছেন—এটাই আমার রোদনের হেতু।এতে বৌদ্ধ গুরুদেব আরও রুষ্ট হলেন। তিনি তখন কুমারিলকে বলিলেন, আপনি প্রমাণ করুন যে আমি কি অন্যায় বাক্য বলেছি! এ কথার পরবর্তীতে কুমারিল ভট্টের সাথে বেদের প্রামাণ্য নিয়ে তাদের ভীষণ বিচারযুদ্ধ শুরু হয়। বহুক্ষণ বিচারের পর বৌদ্ধগুরু কুমারিলের যুক্তিশরে জর্জরিত হয়ে আর প্রশ্নের দিতে পারলেন না। পরিশেষে কুমারিল ভট্ট বললেন—সর্বজ্ঞের উপদেশ ভিন্ন জীব সর্বজ্ঞ হতে পারে না। বুদ্ধ বেদজ্ঞানে জ্ঞানী হয়ে বেদ মানেন নাই— এটা তাঁর চৌর্য ভিন্ন আর কিই বা হতে পারে? এ কথা শুনে বৌদ্ধগুরু আরও ক্রুদ্ধ হয়ে উঠলেন। এবং বলিলেন—তোমায় এই উচ্চ প্রাসাদ হতে নিক্ষেপ করে প্রাণবধ করা উচিত।
বৌদ্ধ গুরুর এ আদেশ শুনে উত্তেজিত ভিক্ষু শিষ্যগণ কুমারিল ভট্টকে টেনে নিয়ে বলপূর্বক উচ্চ ছাদ হতে ফেলে দিলেন। উচ্চ ছাদ হতে পতনকালে কুমারিল ভট্ট উচ্চৈঃস্বরে বললেন— বেদ যদি প্রমাণ হয়, তবে আমি অক্ষত শরীরেই জীবিত থাকব। তবে অত্যন্ত আশ্চর্যজনকভাবে এত উচ্চ স্থান থেকে নিচে পড়ে গিয়েও, কুমারিল ভট্টের মৃত্যু হয় না।এমন কি তিনি কোন গুরুতর আঘাতও তার শরীর লাগে না। বৌদ্ধগণ এ বিষয়টি দেখে একেবারে স্তম্ভিত হয়ে যায়। কুমারিল ভট্ট তখন বলেন—ওহে বৌদ্ধগণ! আমি দেখছি আমার একটি চক্ষুতে একটুমাত্র আঘাত লেগেছে। আমার এ ক্ষতিও হইত না, যদি আমি—"বেদ যদি প্রমাণ হয়” বেদ সম্পর্কে এই প্রকারের সংশয়াত্মক বাক্যপ্রয়োগ না করতাম। বৌদ্ধগণ তখন কুমারিলের দৈবশক্তি অনুমান করে অত্যন্ত ভীত হয়ে তাঁকে পরিত্যাগ করে।স্বল্প সময়েই এ ঘটনাটি আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। বৈদক ব্রাহ্মণগণ এই সংবাদ পেয়ে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থলে এসে কুমারিল ভট্টকে নিয়ে যান। পরবর্তীতে উভয়পক্ষের আয়োজনে এক বিরাট বিচারের ব্যবস্থা হইল। দেশবিদেশ হইতে উভয়পক্ষের পণ্ডিতগণের সমাগম হইল। ধর্মকীর্তি প্রভৃতি সকলেই উপস্থিত হইলেন। দেশের রাজা প্রজা সকলেই উপস্থিত। বিচারের পণ নির্ধারণ করা হল—বিজেতার মত গ্রহণ অথবা তুষানলে প্রাণত্যাগ। যথারীতি বিচার শুরু হল। কিন্তু বৌদ্ধগণ যথাসাধ্য চেষ্টা করেও জয়ী হতে পারলেন না। বিচারে পরাজিত হয়ে বৌদ্ধগুরু বললেন—আমি বিচারে পরাজিত হয়েছি বটে, কিন্তু বৌদ্ধমতে আমার বিশ্বাস নষ্ট হয়নি। বিচারে জয়ের কারণ—প্রতিভা। যা হউক আমি বুদ্ধের মত ত্যাগ করব না—প্রাণত্যাগই আমি বরং করিলাম। এ বলে বৌদ্ধগুরু তুষানলে সর্বসমক্ষে প্রাণত্যাগ করলেন। ফলে রাজগৃহের বৌদ্ধপ্রাধান্য চিরদিনের জন্য অস্তমিত হয়ে গেল। পণ্ডিতগণ নিজ নিজ স্থানে চলিয়া গেলেন।কুমারিল ভট্টের এ বিজয়, ব্রাহ্মণগণকে অত্যন্ত উৎসাহিত করে তুললো। মগধরাজ কৃষ্ণগুপ্তের বংশধর আদিত্যসেন কুমারিলের উপর এতই অনুরক্ত হলেন যে, তিনি এক অশ্বমেধ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিলেন। এভাবে নিরবচ্ছিন্ন বৈদিক ধর্মের প্রচার করে শেষ বয়সে কুমারিল ভট্ট সেচ্ছায় তুষানলে প্রাণত্যাগের সিদ্ধান্ত নেয়। তার শিক্ষা গুরু তাঁকে মেরে ফেলতে চেয়েছে এবং সে লক্ষ্যে তাঁকে সুউচ্চ ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেয়া হয়। কিন্তু রাখে হরি মারে কে? সে দৈবীকৃপায় রক্ষা পায়। গুরুর শিষ্যবধ প্রচেষ্টার মত হীনকর্মের পরেও, কুমারিল ভট্ট তাঁর গুরুর মৃত্যুতে নিজের অন্তরে পাপবোধ অনুভব করে। কুমারিল ভট্টের কাছে বিচারে পরাজিত হয়ে লজ্জায় তাঁর শিক্ষাগুরু তুষানলে প্রাণত্যাগের বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে অত্যন্ত পীড়া দেয়। তিনি উপলব্ধি করেন, তাঁর সেই বৌদ্ধ ধর্মগুরু ভালো মন্দ যাই হোক না কেন; তাঁর নিজের শিক্ষাগুরু ছিলেন। তাঁর থেকে কিছুটা হলেও শিক্ষা লাভ তিনি করেছেন। তিনি যদি তাঁর শিক্ষাগুরুর থেকে ভালো করে বৌদ্ধ ধর্মদর্শন জানতে না পারতেন; তবে তিনি পূর্বপক্ষ বৌদ্ধমতকে খণ্ডন করে বৈদিক মতকে সুদৃঢ় ভিত্তিতে স্থাপন করতে পারতেন না। তাই বৌদ্ধমতকে খণ্ডন করার জন্য বৌদ্ধ মত ভালো করা জানা অত্যন্ত প্রয়োজন। যাঁর থেকে বৌদ্ধমতে শিক্ষা লাভ করেছেন, সেই শিক্ষা গুরুর মৃত্যুর কারণ যেহেতু তিনি। তাই কুমারিল ভট্ট এক ভয়ংকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, তিনিও তাঁর শিক্ষাগুরুর মত স্বেচ্ছায় তুষানলে প্রাণত্যাগ করবেন। সেই লক্ষ্যে তিনি তুষানলে বসেন। ঠিক সে সময়েই শঙ্করাচার্যের সাথে দেখা হয়। শঙ্করাচার্য শাস্ত্রার্থ বিচারের জন্য তাঁর কাছে সে সময়েই উপস্থিত হন। শঙ্করাচার্য কুমারিল ভট্টকে তাঁর নিজের লেখা ব্রহ্মসূত্র ভাষ্যের উপরে একটি বার্তিক রচনা করতে বলেন। তুষানলে পরিত্যাগ করে শাস্ত্রার্থ বিচারের প্রার্থনা করার পরেও কুমারিল ভট্ট তাঁর প্রাণত্যাগের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। তবে মৃত্যুকালে তিনি একটি সন্তুষ্টি নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন যে, জগতে তাঁর যোগ্য উত্তরসূরীর আগমন ঘটেছে। সেই যোগ্য উত্তরসূরী শঙ্করাচার্যের হাতেই আগামীতে বৈদিক ধর্মের পুনরুত্থান ঘটবে।
তথ্য সহায়তা:
১. রাজেন্দ্রনাথ ঘোষ, আচার্য শঙ্কর ও রামানুজ, উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা: চতুর্থ পুনর্মুদ্রণ ২০১৪
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।