আমরা জন্মের পর থেকেই জানি এবং যা সর্বজন স্বীকৃত #বাংলাদেশের_হিন্দু সম্প্রদায় শতভাগ #রাজাকার মুক্ত সম্প্রদায়। এ সম্প্রদায়ের এক শতাংশ মানুষও ১৯৭১ সালে দেশদ্রোহিতার সাথে যুক্ত ছিলো না। এ কারণেই মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি অসভ্যদের চরম নির্মমতার সবচেয়ে বেশী শিকার হয়েছে এবং সবচেয়ে বেশী ভারতে শরণার্থী হয়েছে অসহায় হিন্দু সম্প্রদায়।
১৯৭১ সালে একবুক রক্তস্নানের পরেও শুধুমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের থেকেই কোন দেশদ্রোহী, আত্মঘাতী রাজাকারের জন্ম হয়নি।
অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ থেকে ধর্মীয় নেতাদের বিশাল একটা অংশ সরাসরি দেশদ্রোহের সাথে যুক্ত ছিলো। শর্ষিণার পীর আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহের মতো অনেক পীরেরাই সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো। #ইসলামপন্থী_রাজনৈতিক
গোলাম আজম, নিজামী, মুজাহিদ, সাইদির কথা আর কিই বা বলবো, সবাই জানে!
গোলাম আজম, নিজামী, মুজাহিদ, সাইদির কথা আর কিই বা বলবো, সবাই জানে!
আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রথম পর্যায়ের ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়টি। আমরা সাধুবাদ জানাই সরকারের এ প্রচেষ্টাকে। কিন্তু কিছু অসভ্য, বর্বর, রাজনৈতিক নেতাদের অদৃশ্য আঙুলি হেলনে রাজাকারের এ তালিকাটিকে হাস্যকর প্রহসনে পরিণত করে তুলেছে।
বিজয় দিবসের দিনে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় রাজাকারের তালিকায় দেখা যায় বরিশালের সর্বজন শ্রদ্ধেয় এড. #তপন_কুমার_চক্রবর্ত্তী, তার মা বরিশালের এক খ্যাতিমান বিদুষী নারী এবং শহীদজায়া ঊষা রানী চক্রবর্ত্তী (সিরিয়াল-৪৫) সহ আরো চারজন বরিশালের অত্যন্ত সম্মানিত হিন্দু নারীকে তথ্যপূর্ণ কোন ডকুমেন্ট ছাড়াই রাজাকারের তালিকাভূক্ত করে অসম্মানিত করা হয়েছে। নামগুলো হলো, বরিশাল নগরীর ঝাউতলা এলাকার কনক প্রভা মজুমদার (সিরিয়াল-৩৭), উজিরপুরের বিজয়া বালা দাস (সিরিয়াল-৩৫), আভা রানী দাস (সিরিয়াল-২৭), পারুল বালা কর্মকার (সিরিয়াল-৩৩)। যাদের বরিশাল বিভাগের নারী রাজাকারের তালিকাভূক্ত করা হয়েছে, তাদের অনেককেই আমি পারিবারিকভাবে চিনি। এ কারণেই বিষয়টি আমাকে ব্যথিত এবং যুগপৎভাবে ক্ষুব্ধ করেছে।
একজন #মুক্তিযোদ্ধার_সন্তান হিসেবে আমি বিস্মিত মন্ত্রণালয়ের এ অসভ্যতায়। নিউজটি এতটাই হাস্যকর এবং অবিশ্বাস্য যে বিষয়টি ফেসবুকে দেখে আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার শুধুমাত্র মনে হলো, ক্ষমতাসীনদের মধ্যে থাকা কিছু চোদ্দগুষ্টি রাজত্ব ভোগকারী ব্যক্তিবর্গ নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে যে কতটা নিচে নামতে পরে তা তারা নিজেরাও ঠিকঠাক জানে না। হয়তো আমার এই লেখা তাদের চোখে পরলে আমার বাবাকেও মুক্তিযোদ্ধা থেকে সরাসরি রাজাকার বানিয়ে দিতে পারে এর পরের প্রকাশিত গেজেটে; কিছুই অসম্ভব নয় এই বংশীয় ক্ষমতার ভিক্ষুকদের কাছে।
এই তালিকাটিতে অনেক ক্ষমতাসীনদের আব্বা, চাচা, নানা, দাদা এবং বেয়াই সহ অনেকেরই নাম নেই; মনে হলো ক্ষমতার ওয়াশিং মেশিনে রাজাকার সব ছাফ হয়ে ঝকঝকে সাদামনের মানুষ হয়ে গেছে।
হায়রে বিচিত্র দেশ!
হায়রে #মুক্তিযুদ্ধের_চেতনা!
সরকারের মহৎ উদ্দেশ্যে করা এই রাজাকারের তালিকাটি নিয়ে যে সকল গাজাখোর তাদের ব্যক্তিস্বার্থের চরিতার্থ করতে ব্যবহার করেছে, আমি বিজয় দিবসের এ পবিত্র দিনে সেই বদমাইশদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
অথবা যদি সম্ভব হতো, প্রকাশ্যে গাছের সাথে উল্টা করে বেঁধে আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত পিটাতে পারতাম, তাহলে মনে হয়তো কিছুটা হলেও শান্তি পেতাম।
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।