-->

ধর্ম নির্ণয়ে বেদই একমাত্র প্রমাণ; পুরাণ এবং স্মৃতি সহায়ক মাত্র

বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিছু ব্যক্তি প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদকে পাশ কাটিয়ে শুধু পৌরাণিক গ্রন্থ অথবা বিভিন্ন বাবাগুরুদের লেখা ছড়ার বই, গ...

অতিরিক্ত নেতিবাচক চিন্তায়, মানুষ সিজোফ্রেনিয়াগ্রস্ত হয়।

সিজোফ্রেনিয়া হল, একটি জটিল মানসিক অসুস্থতা।এ রোগের আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে দ্বিখণ্ডিত সত্ত্বা বিরাজ করে। অর্থাৎ একটি মানুষের মাঝে লুকিয়ে থাকে, আরো একটি মানুষ। নিজের চারপাশের জগৎকে অপ্রকৃতস্থ ভাবে দেখা এবং সে দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা করাই হল সিজোফ্রেনিয়া।সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম স্বতঃস্ফূর্তভাবে করতে পারে না। আশেপাশের সকলের প্রতি একটি অকারণ সন্দেহ প্রবণতা তৈরি হয়। সে মনে করে সকলেই তার ক্ষতি করব।

আমাদের অনেকের মধ্যেই নিজের অজ্ঞাতসারে সিজোফ্রেনিয়ার প্রাথমিক স্তর বাস করে। বিষয়টি আমরা অনেকেই টের পাই না। নিজের তৈরি করা একটি 'ইউটোপিয়া' তৈরি করে সেখানেই রাজা হয়ে বসে থাকি। জগতকে দেখি স্বার্থের চোখ দিয়ে, শত্রুতার চোখ দিয়ে। জগতকে আমরা যে দৃষ্টিতে দেখবো, জগতও ঠিক সে রূপেই আমাদের সামনে প্রতিভাত হবে। পাহাড়ের চূড়ায় উঠে, আমরা যদি চিৎকাররে কো ধ্বনির সৃষ্টি করি, তবে সেই ধ্বনিই প্রতিধ্বনিত হয়ে পুনরায় আমাদের কাছে ফিরে আসে। আমরা যা বলি, তাই প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে আসে। যদি চিৎকার করে বলি, "আমি ভালোবাসি"।তবে সেই ভালোবাসা বারবার প্রতিধ্বনিত হয়ে পুনরায় আমাদের কাছেই ভালোবাসা হয়ে ফিরে আসে। পক্ষান্তরে যদি বলি, "ঘৃণা করি"। তবে নিজের ঘৃণাই আবার নিজের কাছে বারবার প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে আসে। তাই শুক্ল যজুর্বেদ সংহিতায় বলা হয়েছে:


দৃতে দৃংহ মা মিত্রস্য মা চক্ষুষা

সর্বাণি ভূতানি সমীক্ষন্তাম্।

মিত্রস্যাহং চক্ষুষা সর্বাণি ভূতানি সমীক্ষে।

মিত্রস্য চক্ষুষা সমীক্ষামহে।।

(শুক্ল যজুর্বেদ সংহিতা: ৩৬.১৮)

"হে দুঃখনাশক পরমাত্মন্ ! আমাকে সুখের সহিত বর্দ্ধন কর। সকল প্রাণী যেন আমাকে বন্ধুর দৃষ্টিতে দেখে, আমি যেন জগতের সকল প্রাণীকে সর্বদা বন্ধুর দৃষ্টিতে দেখি। আমরা সকলেই যেন পরস্পর পরস্পরকে বন্ধুর দৃষ্টিতে দেখি।"

করোনাকালের একঘেয়েমি বন্দী জীবনের কারণে মানুষ আরও একাকীত্ব এবং নিঃসঙ্গ হয়ে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে অনেকেই সিজোফ্রেনিয়া,ইউটোপিয়াসহ বিভিন্ন মানসিক রোগে ভুগছে। ব্যাপক অবসাদ এবং হতাশা তৈরি হচ্ছে বহু মানুষের জীবনে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।মানসিক অবসাদের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে অনেকে আত্মঘাতী হয়ে স্বেচ্ছায় নিজের এত সাধের জীবনকে শেষ করে দিচ্ছে। তাই এর উত্তরণ একান্ত প্রয়োজন।


সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। 
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।


ইচ্ছার অনন্ত শক্তি, ইচ্ছা শক্তিতেই বিশ্ব জয় করা যায়।
মন্তব্যগুলো দেখুনমন্তব্যগুলো লুকান🙁