-->

ধর্ম নির্ণয়ে বেদই একমাত্র প্রমাণ; পুরাণ এবং স্মৃতি সহায়ক মাত্র

বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিছু ব্যক্তি প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদকে পাশ কাটিয়ে শুধু পৌরাণিক গ্রন্থ অথবা বিভিন্ন বাবাগুরুদের লেখা ছড়ার বই, গ...

বাহির-পানে চোখ মেলেছি, আমার হৃদয়-পানে চাই নি।

বাহির-পানে চোখ মেলেছি,   আমার হৃদয়-পানে চাই নি  পরমেশ্বর থেকেই জীবজগত সহ সকল কিছুর উৎপত্তি। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সকল শক্তির উৎস তিনি।জগতে মনুষ্যসহ প্রাণীকুলকে তিনিই প্রেরণ করেছেন। প্রত্যেকটি জীবের মাঝে যেহেতু পরমেশ্বর বিরাজমান। তাই প্রত্যেকটি জীবের মাঝে অণু পরিমাণে হলেও পরমেশ্বরের শক্তি বিরাজিত। পরমেশ্বর হলেন বিভূচৈতন্য এবং তাঁর সৃষ্টি জীব হলেন অণুচৈতন্য। কিন্তু অজ্ঞানে আবব্ধ থাকায় জীব নিজের মধ্যে ঈশ্বরের অনন্তশক্তির বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারে না। যেহেতু উপলব্ধি করতে পারে না, তাই সেই শক্তিকে জাগিয়ে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হতে পারে না।সে বিশ্বাস হীনতায় ভোগে। আমরা বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে বাহরের পৃথিবীকে দেখি।কিন্তু একবারও অন্তঃস্থিত ব্রহ্মসত্ত্বাকে উপলব্ধি করার প্রচেষ্টা করি না। যাঁকে খুঁজে বেড়াই, তিনি যে আজন্ম আমার হৃদয়েই আসন পেতে আছেন, তাও আমরা উপলব্ধি করার কখনো চেষ্টা করি না। চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, ত্বক, জিহ্বা এ পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয় এবং  বাক্, পাণি, পাদ, পায়ু, উপস্থ কর্মেন্দ্রিয়ের মাধ্যমে জগতে বেঁচে থাকি। এ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে  শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস ও গন্ধ এ তন্মাত্র গ্রহণ করে আমাদের জীবনকে পরিচালিত করি। কিন্তু অন্তঃস্থিত ব্রহ্মসত্ত্বাকে উপলব্ধি করতে না পারলে, দেহের  বহিঃইন্দ্রিয়গুলো দ্রুতগামী ঘোড়া হয়ে দিগ্বিদিক ছুটে বেড়ায়। ইন্দ্রিয়রূপ ঘোড়ার স্বেচ্ছাচারী পাগলামির ফলাফল ভয়াবহ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন: "আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পাই নি। তোমায় দেখতে আমি পাই নি। বাহির-পানে চোখ মেলেছি, আমার হৃদয়-পানে চাই নি॥ আমার সকল ভালোবাসায় সকল আঘাত সকল আশায়  তুমি ছিলে আমার কাছে, তোমার কাছে যাই নি ॥" গুটিকয়েক যারা অন্তঃস্থিত ব্রহ্মসত্ত্বাকে উপলব্ধি করতে পারে তারাই সাধনপথে অগ্রসর হয়ে মুক্তিলাভ করতে পারে। পরমেশ্বরের সকল প্রকারের শক্তি প্রত্যেকটি জীবের মধ্যেই সুপ্তভাবে আছে। সেই শক্তিকে জাগিয়ে তোলার জন্য বেদের মধ্যে পরমেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়েছে।পরমেশ্বর তেজঃস্বরূপ, সেই তেজে জীব তেজস্বী হয়। তিনিই বীর্য স্বরূপ, যে বীর্যশক্তিতে জীব বীর্য্যবান হয়। তিনিই সকল শক্তির উৎস। তিনিই জীবনীশক্তি, যে শক্তিতে জীব বেঁচে থাকে। তিনিই অধর্ম ও অন্যায়ের দণ্ডদাতা হয়ে সকল অন্যায়ের জীবকে প্রতিরোধ শক্তি প্রদান করেন। তিনিই সহনশীল সহ্যশক্তি হয়ে সহিষ্ণুতা প্রদান করেন। তেজোঽসি তেজো ময়ি ধেহি।  বীৰ্য্যমসি বীৰ্য্যং ময়ি ধেহি।  বলমসি বলং ময়ি ধেহি। ওজোঽসি ওজো ময়ি ধেহি। মন্যুরসি মন্যুং ময়ি ধেহি।  সহোঽসি সহো ময়ি ধেহি।  (শুক্ল যজুর্বেদ সংহিতা:১৯.৯.১-৬)  "হে পরমেশ্বর, তুমি তেজঃস্বরূপ, আমাকে তেজ প্রদান কর। তুমি বীর্য্য স্বরূপ, আমাকে বীর্য্যবান কর। তুমি সকল শক্তির উৎস, আমাকে শক্তি প্রদান কর। তুমি ওজঃ স্বরূপ জীবনীশক্তি, আমাকে জীবনীশক্তি প্রদান কর। তুমি অধর্ম ও অন্যায়ের দণ্ডদাতা, আমাকে অন্যায়ের প্রতিরোধ শক্তি প্রদান কর। তুমি সহনশীল সহ্যশক্তি, আমাকে সহিষ্ণুতা প্রদান কর।" কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী  সহকারী অধ্যাপক,  সংস্কৃত বিভাগ,  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
পরমেশ্বর থেকেই জীবজগত সহ সকল কিছুর উৎপত্তি। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সকল শক্তির উৎস তিনি।জগতে মনুষ্যসহ প্রাণীকুলকে তিনিই প্রেরণ করেছেন। প্রত্যেকটি জীবের মাঝে যেহেতু পরমেশ্বর বিরাজমান। তাই প্রত্যেকটি জীবের মাঝে অণু পরিমাণে হলেও পরমেশ্বরের শক্তি বিরাজিত। পরমেশ্বর হলেন বিভূচৈতন্য এবং তাঁর সৃষ্টি জীব হলেন অণুচৈতন্য। কিন্তু অজ্ঞানে আবব্ধ থাকায় জীব নিজের মধ্যে ঈশ্বরের অনন্তশক্তির বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারে না। যেহেতু উপলব্ধি করতে পারে না, তাই সেই শক্তিকে জাগিয়ে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হতে পারে না।সে বিশ্বাস হীনতায় ভোগে। আমরা বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে বাহরের পৃথিবীকে দেখি।কিন্তু একবারও অন্তঃস্থিত ব্রহ্মসত্ত্বাকে উপলব্ধি করার প্রচেষ্টা করি না। যাঁকে খুঁজে বেড়াই, তিনি যে আজন্ম আমার হৃদয়েই আসন পেতে আছেন, তাও আমরা উপলব্ধি করার কখনো চেষ্টা করি না। চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, ত্বক, জিহ্বা এ পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয় এবং বাক্, পাণি, পাদ, পায়ু, উপস্থ কর্মেন্দ্রিয়ের মাধ্যমে জগতে বেঁচে থাকি। এ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস ও গন্ধ এ তন্মাত্র গ্রহণ করে আমাদের জীবনকে পরিচালিত করি। কিন্তু অন্তঃস্থিত ব্রহ্মসত্ত্বাকে উপলব্ধি করতে না পারলে, দেহের বহিঃইন্দ্রিয়গুলো দ্রুতগামী ঘোড়া হয়ে দিগ্বিদিক ছুটে বেড়ায়। ইন্দ্রিয়রূপ ঘোড়ার স্বেচ্ছাচারী পাগলামির ফলাফল ভয়াবহ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন:
"আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পাই নি।
তোমায় দেখতে আমি পাই নি।
বাহির-পানে চোখ মেলেছি, আমার হৃদয়-পানে চাই নি॥
আমার সকল ভালোবাসায় সকল আঘাত সকল আশায়
তুমি ছিলে আমার কাছে, তোমার কাছে যাই নি ॥"
গুটিকয়েক যারা অন্তঃস্থিত ব্রহ্মসত্ত্বাকে উপলব্ধি করতে পারে তারাই সাধনপথে অগ্রসর হয়ে মুক্তিলাভ করতে পারে। পরমেশ্বরের সকল প্রকারের শক্তি প্রত্যেকটি জীবের মধ্যেই সুপ্তভাবে আছে। সেই শক্তিকে জাগিয়ে তোলার জন্য বেদের মধ্যে পরমেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়েছে।পরমেশ্বর তেজঃস্বরূপ, সেই তেজে জীব তেজস্বী হয়। তিনিই বীর্য স্বরূপ, যে বীর্যশক্তিতে জীব বীর্য্যবান হয়। তিনিই সকল শক্তির উৎস। তিনিই জীবনীশক্তি, যে শক্তিতে জীব বেঁচে থাকে। তিনিই অধর্ম ও অন্যায়ের দণ্ডদাতা হয়ে সকল অন্যায়ের জীবকে প্রতিরোধ শক্তি প্রদান করেন। তিনিই সহনশীল সহ্যশক্তি হয়ে সহিষ্ণুতা প্রদান করেন।
তেজোঽসি তেজো ময়ি ধেহি।
বীৰ্য্যমসি বীৰ্য্যং ময়ি ধেহি।
বলমসি বলং ময়ি ধেহি।
ওজোঽসি ওজো ময়ি ধেহি।
মন্যুরসি মন্যুং ময়ি ধেহি।
সহোঽসি সহো ময়ি ধেহি।
(শুক্ল যজুর্বেদ সংহিতা:১৯.৯.১-৬)
"হে পরমেশ্বর, তুমি তেজঃস্বরূপ, আমাকে তেজ প্রদান কর। তুমি বীর্য্য স্বরূপ, আমাকে বীর্য্যবান কর। তুমি সকল শক্তির উৎস, আমাকে শক্তি প্রদান কর। তুমি ওজঃ স্বরূপ জীবনীশক্তি, আমাকে জীবনীশক্তি প্রদান কর। তুমি অধর্ম ও অন্যায়ের দণ্ডদাতা, আমাকে অন্যায়ের প্রতিরোধ শক্তি প্রদান কর। তুমি সহনশীল সহ্যশক্তি, আমাকে সহিষ্ণুতা প্রদান কর।"
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।

মন্তব্যগুলো দেখুনমন্তব্যগুলো লুকান🙁