-->

ধর্ম নির্ণয়ে বেদই একমাত্র প্রমাণ; পুরাণ এবং স্মৃতি সহায়ক মাত্র

বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিছু ব্যক্তি প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদকে পাশ কাটিয়ে শুধু পৌরাণিক গ্রন্থ অথবা বিভিন্ন বাবাগুরুদের লেখা ছড়ার বই, গ...

ভগবান যাঁকে কৃপা করেন, তাঁর সম্পদ হরণ করে নেন

কলিযুগে কলির প্রভাবে ভগবানের প্রতি আমাদের বিশ্বাস সুদৃঢ় না হওয়ায় সামান্য বাতাসেই আমাদের বিশ্বাসের প্রদীপ নিভু নিভু করে। জীবন সমুদ্রে সামান্য দুঃখকষ্টতেই আমরা ঘাবড়ে যাই। দুঃখের পরিমাণ যদি একটু বেড়ে যায় তবে আমাদের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস পর্যন্ত সংশয়াচ্ছন্ন হয়ে যায়। পরমেশ্বরকে সাকার রূপে প্রতিমায় উপাসনা করায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ঈশ্বরের কাছে জাগতিক চাওয়া পাওয়ার ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। তবে সেই চাওয়া পাওয়া পূর্ণ না হলে, তাদের মধ্যে তখন হতাশা দেখা যায়। কিন্তু আমরা একবারও উপলব্ধি করতে পারি না যে, ভগবানই আমাদের বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করতে বিভিন্ন প্রকারের পরিস্থিতির সম্মুখীন করেন। এ বিষয়টি শ্রীমদ্ভাগবতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজমুখেই বলেছেন।তিনি যাঁকে অনুগ্রহ বা কৃপা করেন, ধীরে ধীরে তাঁর সমস্ত জাগতিক ধনসম্পদ হরণ করে নেন। কারণের সাধকের কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ ধন হল ভগবদপ্রাপ্তি। সেই ভগবদপ্রাপ্তির পথ অত্যন্ত কঠিন। সেই পথে চলতে গিয়ে সাধক যখন জাগতিক ধনসম্পদহীন হয়ে যায়, তখন তাঁর আত্মীয় পরিজন তাকে অবজ্ঞাপূর্বক পরিত্যাগ করে চলে যায়। তখন ধীরেধীরে সে উপলব্ধি করতে পারে, জগতের ধন সম্পদ এবং সকল সম্পর্কের অনিত্যতা। ভগবানকে প্রসন্ন করা ও সদা তাঁর আরাধনায় যুক্ত থাকা অত্যন্ত কঠিন কার্য। শ্রীভগবানুবাচ যস্যাহমনুগৃহ্ণামি হরিষ্যে তদ্ধনং শনৈঃ।  ততোঽধনং ত্যজন্ত্যস্য স্বজনা দুঃখদুঃখিতম্॥ স যদা বিতথোদ্যোগো নির্বিঘ্নঃ স্যাদ্ ধনেহয়া।  মৎপরৈঃ কৃতমৈত্রস্য করিষ্যে মদনুগ্রহম্৷৷ তদ্‌ব্রহ্ম পরমং সূক্ষ্মং চিন্মাত্রং সদনন্তকম্। অতো মাং সুদুরারাধ্যং হিত্বান্যান্ ভজতে জনঃ৷৷ (শ্রীমদ্ভাগবত:১০.৮৮.৮-১০) "ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন— রাজন্ ! আমি যার উপর অনুগ্রহ করি, ধীরে ধীরে তার সমস্ত ধনসম্পদ হরণ করে নেই। এইভাবে যখন সে ধনসম্পদহীন হয়ে যায় তখন তার আত্মীয়স্বজন তাকে অবজ্ঞাপূর্বক পরিত্যাগ করে চলে যায়। সে আবার ধনসম্পদ আহরণে প্রয়াসী হলে আমি তার সমস্ত উদ্যম বিফল করে দিই। বারে বারে ব্যর্থ হয়ে সে ধনসম্পদ আহরণে নিবৃত্ত হয়ে তাকে দুঃখময় জ্ঞান করে আর আমার প্রেমী ভক্তদের সঙ্গে সাধুসঙ্গে মগ্ন হয়। তখন আমি তার উপর নিজ অহৈতুকী কৃপা বর্ষণ করে থাকি৷ তখন আমার কৃপায় তার পরম সূক্ষ্ম অনন্ত সচ্চিদানন্দস্বরূপ পরব্রহ্ম প্রাপ্তি হয়। এইভাবে আমাকে প্রসন্ন করা ও আমার আরাধনায় যুক্ত থাকা নিঃসন্দেহে কঠিন কার্য। তাই সাধারণ ব্যক্তিসকল আমাকে ছেড়ে অন্য আরাধনা করে৷" ভয়ংকর বিপদ কখনো ভক্তকে বিচলিত করতে পারে না। তাই শ্রীমদ্ভাগবতের প্রথম স্কন্ধে কুন্তীদেবী ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে উদ্দেশ্য করে বলেন: বিপদঃ সন্তু নঃ শশ্বত্তত্র তত্র জগদ্গুরো।  ভবতো দর্শনং যৎ স্যাদপুনর্ভবদর্শনম্৷৷ (শ্রীমদ্ভাগবত:১.৮.২৫) "হে জগদ্‌গুরু ! আমাদের জীবনে পদে পদে বিপদ আসুক ; কারণ বিপদের মধ্যেই নিশ্চিতভাবে আপনার দর্শনলাভ হয় এবং আপনার দর্শনলাভ হলে আর জন্মমৃত্যুর চক্রে পড়তে হয় না৷" তাই কুন্তীদেবীর মত দৃঢ় চিত্তের একাগ্র ভক্ত হওয়া প্রয়োজন। যিনি ভগবানের দর্শনের আকাঙ্ক্ষায় নিজের পদেপদে বিপদ প্রার্থনা করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পূজা' পর্যায়ের সংগীতেও ঠিক এমনি ভাব পাওয়া যায়। তিনিও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন যেন, দুঃখ বেদনাময় আগুনের দহন প্রাপ্ত হয়ে জীবন পুণ্য হয়। তিনি দহন দানে পুণ্য হয়ে দেবালয়ের প্রদীপের শিখা হয়ে দিবারাত্রি প্রজ্জ্বলিত হতে চেয়েছেন। "আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে। এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে ॥ আমার এই দেহখানি তুলে ধরো, তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো- নিশিদিন আলোক-শিখা জ্বলুক গানে॥" কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী  সহকারী অধ্যাপক,  সংস্কৃত বিভাগ,  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  কলিযুগে কলির প্রভাবে ভগবানের প্রতি আমাদের বিশ্বাস সুদৃঢ় না হওয়ায় সামান্য বাতাসেই আমাদের বিশ্বাসের প্রদীপ নিভু নিভু করে। জীবন সমুদ্রে সামান্য দুঃখকষ্টতেই আমরা ঘাবড়ে যাই। দুঃখের পরিমাণ যদি একটু বেড়ে যায় তবে আমাদের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস পর্যন্ত সংশয়াচ্ছন্ন হয়ে যায়। পরমেশ্বরকে সাকার রূপে প্রতিমায় উপাসনা করায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ঈশ্বরের কাছে জাগতিক চাওয়া পাওয়ার ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। তবে সেই চাওয়া পাওয়া পূর্ণ না হলে, তাদের মধ্যে তখন হতাশা দেখা যায়। কিন্তু আমরা একবারও উপলব্ধি করতে পারি না যে, ভগবানই আমাদের বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করতে বিভিন্ন প্রকারের পরিস্থিতির সম্মুখীন করেন। এ বিষয়টি শ্রীমদ্ভাগবতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজমুখেই বলেছেন।তিনি যাঁকে অনুগ্রহ বা কৃপা করেন, ধীরে ধীরে তাঁর সমস্ত জাগতিক ধনসম্পদ হরণ করে নেন। কারণের সাধকের কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ ধন হল ভগবদপ্রাপ্তি। সেই ভগবদপ্রাপ্তির পথ অত্যন্ত কঠিন। সেই পথে চলতে গিয়ে সাধক যখন জাগতিক ধনসম্পদহীন হয়ে যায়, তখন তাঁর আত্মীয় পরিজন তাকে অবজ্ঞাপূর্বক পরিত্যাগ করে চলে যায়। তখন ধীরেধীরে সে উপলব্ধি করতে পারে, জগতের ধন সম্পদ এবং সকল সম্পর্কের অনিত্যতা। ভগবানকে প্রসন্ন করা ও সদা তাঁর আরাধনায় যুক্ত থাকা অত্যন্ত কঠিন কার্য। শ্রীভগবানুবাচ যস্যাহমনুগৃহ্ণামি হরিষ্যে তদ্ধনং শনৈঃ।  ততোঽধনং ত্যজন্ত্যস্য স্বজনা দুঃখদুঃখিতম্॥ স যদা বিতথোদ্যোগো নির্বিঘ্নঃ স্যাদ্ ধনেহয়া।  মৎপরৈঃ কৃতমৈত্রস্য করিষ্যে মদনুগ্রহম্৷৷ তদ্‌ব্রহ্ম পরমং সূক্ষ্মং চিন্মাত্রং সদনন্তকম্। অতো মাং সুদুরারাধ্যং হিত্বান্যান্ ভজতে জনঃ৷৷ (শ্রীমদ্ভাগবত:১০.৮৮.৮-১০) "ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন— রাজন্ ! আমি যার উপর অনুগ্রহ করি, ধীরে ধীরে তার সমস্ত ধনসম্পদ হরণ করে নেই। এইভাবে যখন সে ধনসম্পদহীন হয়ে যায় তখন তার আত্মীয়স্বজন তাকে অবজ্ঞাপূর্বক পরিত্যাগ করে চলে যায়। সে আবার ধনসম্পদ আহরণে প্রয়াসী হলে আমি তার সমস্ত উদ্যম বিফল করে দিই। বারে বারে ব্যর্থ হয়ে সে ধনসম্পদ আহরণে নিবৃত্ত হয়ে তাকে দুঃখময় জ্ঞান করে আর আমার প্রেমী ভক্তদের সঙ্গে সাধুসঙ্গে মগ্ন হয়। তখন আমি তার উপর নিজ অহৈতুকী কৃপা বর্ষণ করে থাকি৷ তখন আমার কৃপায় তার পরম সূক্ষ্ম অনন্ত সচ্চিদানন্দস্বরূপ পরব্রহ্ম প্রাপ্তি হয়। এইভাবে আমাকে প্রসন্ন করা ও আমার আরাধনায় যুক্ত থাকা নিঃসন্দেহে কঠিন কার্য। তাই সাধারণ ব্যক্তিসকল আমাকে ছেড়ে অন্য আরাধনা করে৷" ভয়ংকর বিপদ কখনো ভক্তকে বিচলিত করতে পারে না। তাই শ্রীমদ্ভাগবতের প্রথম স্কন্ধে কুন্তীদেবী ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে উদ্দেশ্য করে বলেন: বিপদঃ সন্তু নঃ শশ্বত্তত্র তত্র জগদ্গুরো।  ভবতো দর্শনং যৎ স্যাদপুনর্ভবদর্শনম্৷৷ (শ্রীমদ্ভাগবত:১.৮.২৫) "হে জগদ্‌গুরু ! আমাদের জীবনে পদে পদে বিপদ আসুক ; কারণ বিপদের মধ্যেই নিশ্চিতভাবে আপনার দর্শনলাভ হয় এবং আপনার দর্শনলাভ হলে আর জন্মমৃত্যুর চক্রে পড়তে হয় না৷" তাই কুন্তীদেবীর মত দৃঢ় চিত্তের একাগ্র ভক্ত হওয়া প্রয়োজন। যিনি ভগবানের দর্শনের আকাঙ্ক্ষায় নিজের পদেপদে বিপদ প্রার্থনা করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পূজা' পর্যায়ের সংগীতেও ঠিক এমনি ভাব পাওয়া যায়। তিনিও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন যেন, দুঃখ বেদনাময় আগুনের দহন প্রাপ্ত হয়ে জীবন পুণ্য হয়। তিনি দহন দানে পুণ্য হয়ে দেবালয়ের প্রদীপের শিখা হয়ে দিবারাত্রি প্রজ্জ্বলিত হতে চেয়েছেন। "আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে। এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে ॥ আমার এই দেহখানি তুলে ধরো, তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো- নিশিদিন আলোক-শিখা জ্বলুক গানে॥" শ্রীকুশল বরণ চক্রবর্ত্তী সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ। ফেসবুক পোস্ট লিঙ্ক : Facebook ফেসবুক পেজ লিঙ্ক :  Shri Kushal Baran Chakraborty | Facebook
কলিযুগে কলির প্রভাবে ভগবানের প্রতি আমাদের বিশ্বাস সুদৃঢ় না হওয়ায় সামান্য বাতাসেই আমাদের বিশ্বাসের প্রদীপ নিভু নিভু করে। জীবন সমুদ্রে সামান্য দুঃখকষ্টতেই আমরা ঘাবড়ে যাই। দুঃখের পরিমাণ যদি একটু বেড়ে যায় তবে আমাদের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস পর্যন্ত সংশয়াচ্ছন্ন হয়ে যায়। পরমেশ্বরকে সাকার রূপে প্রতিমায় উপাসনা করায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ঈশ্বরের কাছে জাগতিক চাওয়া পাওয়ার ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। তবে সেই চাওয়া পাওয়া পূর্ণ না হলে, তাদের মধ্যে তখন হতাশা দেখা যায়। কিন্তু আমরা একবারও উপলব্ধি করতে পারি না যে, ভগবানই আমাদের বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করতে বিভিন্ন প্রকারের পরিস্থিতির সম্মুখীন করেন। এ বিষয়টি শ্রীমদ্ভাগবতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজমুখেই বলেছেন।তিনি যাঁকে অনুগ্রহ বা কৃপা করেন, ধীরে ধীরে তাঁর সমস্ত জাগতিক ধনসম্পদ হরণ করে নেন। কারণের সাধকের কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ ধন হল ভগবদপ্রাপ্তি। সেই ভগবদপ্রাপ্তির পথ অত্যন্ত কঠিন। সেই পথে চলতে গিয়ে সাধক যখন জাগতিক ধনসম্পদহীন হয়ে যায়, তখন তাঁর আত্মীয় পরিজন তাকে অবজ্ঞাপূর্বক পরিত্যাগ করে চলে যায়। তখন ধীরেধীরে সে উপলব্ধি করতে পারে, জগতের ধন সম্পদ এবং সকল সম্পর্কের অনিত্যতা। ভগবানকে প্রসন্ন করা ও সদা তাঁর আরাধনায় যুক্ত থাকা অত্যন্ত কঠিন কার্য।
শ্রীভগবানুবাচ
যস্যাহমনুগৃহ্ণামি হরিষ্যে তদ্ধনং শনৈঃ।
ততোঽধনং ত্যজন্ত্যস্য স্বজনা দুঃখদুঃখিতম্॥
স যদা বিতথোদ্যোগো নির্বিঘ্নঃ স্যাদ্ ধনেহয়া।
মৎপরৈঃ কৃতমৈত্রস্য করিষ্যে মদনুগ্রহম্৷৷
তদ্‌ব্রহ্ম পরমং সূক্ষ্মং চিন্মাত্রং সদনন্তকম্।
অতো মাং সুদুরারাধ্যং হিত্বান্যান্ ভজতে জনঃ৷৷
(শ্রীমদ্ভাগবত:১০.৮৮.৮-১০)
"ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন— রাজন্ ! আমি যার উপর অনুগ্রহ করি, ধীরে ধীরে তার সমস্ত ধনসম্পদ হরণ করে নেই। এইভাবে যখন সে ধনসম্পদহীন হয়ে যায় তখন তার আত্মীয়স্বজন তাকে অবজ্ঞাপূর্বক পরিত্যাগ করে চলে যায়।
সে আবার ধনসম্পদ আহরণে প্রয়াসী হলে আমি
তার সমস্ত উদ্যম বিফল করে দিই। বারে বারে ব্যর্থ হয়ে সে ধনসম্পদ আহরণে নিবৃত্ত হয়ে তাকে দুঃখময় জ্ঞান করে আর আমার প্রেমী ভক্তদের সঙ্গে সাধুসঙ্গে মগ্ন হয়। তখন আমি তার উপর নিজ অহৈতুকী কৃপা বর্ষণ করে থাকি৷
তখন আমার কৃপায় তার পরম সূক্ষ্ম অনন্ত সচ্চিদানন্দস্বরূপ পরব্রহ্ম প্রাপ্তি হয়। এইভাবে আমাকে প্রসন্ন করা ও আমার আরাধনায় যুক্ত থাকা নিঃসন্দেহে কঠিন কার্য। তাই সাধারণ ব্যক্তিসকল আমাকে ছেড়ে অন্য আরাধনা করে৷"
ভয়ংকর বিপদ কখনো ভক্তকে বিচলিত করতে পারে না। তাই শ্রীমদ্ভাগবতের প্রথম স্কন্ধে কুন্তীদেবী ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
বিপদঃ সন্তু নঃ শশ্বত্তত্র তত্র জগদ্গুরো।
ভবতো দর্শনং যৎ স্যাদপুনর্ভবদর্শনম্৷৷
(শ্রীমদ্ভাগবত:১.৮.২৫)
"হে জগদ্‌গুরু ! আমাদের জীবনে পদে পদে বিপদ আসুক ; কারণ বিপদের মধ্যেই নিশ্চিতভাবে আপনার দর্শনলাভ হয় এবং আপনার দর্শনলাভ হলে আর জন্মমৃত্যুর চক্রে পড়তে হয় না৷"
তাই কুন্তীদেবীর মত দৃঢ় চিত্তের একাগ্র ভক্ত হওয়া প্রয়োজন। যিনি ভগবানের দর্শনের আকাঙ্ক্ষায় নিজের পদেপদে বিপদ প্রার্থনা করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পূজা' পর্যায়ের সংগীতেও ঠিক এমনি ভাব পাওয়া যায়। তিনিও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন যেন, দুঃখ বেদনাময় আগুনের দহন প্রাপ্ত হয়ে জীবন পুণ্য হয়। তিনি দহন দানে পুণ্য হয়ে দেবালয়ের প্রদীপের শিখা হয়ে দিবারাত্রি প্রজ্জ্বলিত হতে চেয়েছেন।
"আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে।
এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে ॥
আমার এই দেহখানি তুলে ধরো,
তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো-
নিশিদিন আলোক-শিখা জ্বলুক গানে॥"
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।
ফেসবুক পোস্ট লিঙ্ক : Facebook ফেসবুক পেজ লিঙ্ক : Shri Kushal Baran Chakraborty | Facebook
মন্তব্যগুলো দেখুনমন্তব্যগুলো লুকান🙁