-->

ধর্ম নির্ণয়ে বেদই একমাত্র প্রমাণ; পুরাণ এবং স্মৃতি সহায়ক মাত্র

বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিছু ব্যক্তি প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদকে পাশ কাটিয়ে শুধু পৌরাণিক গ্রন্থ অথবা বিভিন্ন বাবাগুরুদের লেখা ছড়ার বই, গ...

বাঙালী হিন্দুদের উপর শোষণ ও নিপীড়ন আর কতদিন!

 

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় ১২০৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে পরাধীনতার নাগপাশে বন্ধ হয়ে আজ ভীরু, ক্লীব, কাপুরুত্ব ও দাসসুলভ চরিত্রের অধিকারী হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বার যায় এদেশের হিন্দুরা নিপীড়ন, অত্যাচার, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও বিতাড়নের স্বীকার হচ্ছে। বিশ্বের যেকোন প্রান্তে অন্য ধর্মাবলম্বীদের কেউ বা কিছু কোন ভাবে আক্রান্ত হলে তার প্রভাব বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত গিয়ে পড়ে। একথা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। ১৯৯২ সালে অযোধ্যার কথিত বাবরি মসজিদ ভাঙার পর বাংলাদেশে প্রায় ৩,৬০০ হিন্দু মন্দির ভাঙা হয়েছে। প্রায় ৪০,০০০ হিন্দু বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, প্রায় ৫,০০০ হিন্দু নারী ধর্ষিতা হয়, ৯০০ হিন্দু যুবতী নিখোঁজ হয়। ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ৪০ লক্ষাধিক হিন্দুর ওপর আরও হিংস্র ও বর্বরোচিত নির্যাতনের কিরাও আমরা দুঃখভরে স্মরণ করি। মুক্তিযুদ্ধের পর এই প্রথম আবারও সীমান্তের ওপার গিয়ে প্রায় ৩ লক্ষাধিক হিন্দুকে আশ্রয় নিতে হয়। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা অবর্ণনীয়। আর প্রতিনিয়ত আমাদের সকলের অলক্ষ্যে বাংলার কত যে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ মুখ বুজে নির্যাতন সয়ে চলছে, তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান কেউ দিতে পারবে না। পাশাপাশি ইদানীং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নাম করে ইচ্ছাকৃতভাবে গুজব রটিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নানাভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। বেছে বেছে হিন্দু শিক্ষকদের নামে মিথ্যা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উত্থাপন করে শিক্ষকতায় হিন্দুদের বহুদিনের অৰ্দ্ৰিত সুনাম সচেতনভাবে ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই পথ ধরে ২০১৬ সালে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হিজলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কৃষ্ণপদ মহালী ও অশোক কুমার ঘোষাল, নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের মতো বহু হিন্দু শিক্ষককে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা ফাঁদে ফেলা হয়েছে। ২০১৬ সালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে শ্রীশ্রীসন্তগৌড়ীয় মঠের অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায়কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, একই বছর জুন মাসে ঝিনাইদহে পুরোহিত আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলিকে ও পাবনার হেমায়েতপুর সৎসঙ্গের সেবায়েত নিত্যরঞ্জন পাণ্ডেকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। বর্তমানে হিন্দু সম্প্রদায়কে নির্যাতনের অন্যতম একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হলো ফেসবুক, এবং ফেসবুকে কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে কটূক্তির অভিযোগ। ফেসবুকে কথিত ধর্মীয় কটূক্তির মিথ্যা অভিযোগে অসংখ্যা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে প্রতিনিয়ত ফাঁসানো হচ্ছে। এর সবচেয়ে বড় উদাহারণ ব্রাহ্মবাড়িয়ার নাহিরাগর উপজেলার অসহায় জেলে সম্প্রদায়ের রসরাজ দাস। ২০১৬ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে, ব্রাহ্মবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখির নেতৃত্বে স্থানীয় প্রশাসনের কিছু অংশের সহায়তায় দুই শতাধিক হিন্দু বাড়িঘর ও ১৫টি মন্দিরে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করা হয়। এবং পিটিয়ে আহত করা হয়েছে অর্ধশতাধিক হিন্দু নারী-পুরুষকে। এরই ধারাবাহিকতায়, একই স্টাইলে আবারো হিন্দু নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি ঘটে ২০১৭ সালের ১০শে নভেম্বর রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায়। সেখানেও অভিযুক্ত হতভাগ্য টিটু রায়ের বাড়িসহ এই এলাকার ৮/১০টি বাড়ির ২০ ঘরে আগুন দেওয়া হলে সেগুলো ভষ্মীভূত হয়ে যায়। প্রতিনিয়ত এমনই নির্মম ও অসহায় অবস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে আমাদের। রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাসীন দল হিন্দুর জমি ও বসতবাড়ি দখল করছে নতুবা তাড়িয়ে দিচ্ছে। এরা মনে করছে হিন্দু এদেশে থাকলে লাভ হচ্ছে তাদের ভোট নিশ্চিত থাবো; নতুবা সীমান্ত পার করে দিলে পাবে তাদের জমিজমা। আবার কেউ ভাবছে হিন্দুদের তাড়িয়ে বিপরীতে ভোট ব্যাংক কমাবে, না পারলে নির্যাতন চলবে অব্যাহত। এই আমাদের বর্তমান করুণ ইতিহাস।আমরা কি চিরকাল এভাবে মার খেতে খেতে বিলুপ্ত হয়ে যাব? বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি। আমরা বিশ্বাস করি জন্মদায়িনী জননী এবং জন্মভূমি স্বর্গের থেকেও শ্রেষ্ঠ। রামায়ণে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র ভাই লক্ষ্মণকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন:  অপি স্বর্ণময়ী লঙ্কা ন মে রোচতে লক্ষণ। জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী।।  "লক্ষণ এই লঙ্কাপুরী যদিও স্বর্ণময়ী অতীব সুন্দরী, তবুও তা আমার কাছে রূচিকর নয়; কারণ জননী এবং জন্মভূমি স্বর্গ থেকেও অধিকতর শ্রেষ্ঠ।" ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এদেশের জন্য আমরাই সবচেয়ে বেশি রক্ত দিয়েছি, ত্যাগ স্বীকার করেছি।

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় ১২০৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে পরাধীনতার নাগপাশে বন্ধ হয়ে আজ ভীরু, ক্লীব, কাপুরুত্ব ও দাসসুলভ চরিত্রের অধিকারী হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বার যায় এদেশের হিন্দুরা নিপীড়ন, অত্যাচার, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও বিতাড়নের স্বীকার হচ্ছে। বিশ্বের যেকোন প্রান্তে অন্য ধর্মাবলম্বীদের কেউ বা কিছু কোন ভাবে আক্রান্ত হলে তার প্রভাব বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত গিয়ে পড়ে। একথা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। ১৯৯২ সালে অযোধ্যার কথিত বাবরি মসজিদ ভাঙার পর বাংলাদেশে প্রায় ৩,৬০০ হিন্দু মন্দির ভাঙা হয়েছে। প্রায় ৪০,০০০ হিন্দু বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, প্রায় ৫,০০০ হিন্দু নারী ধর্ষিতা হয়, ৯০০ হিন্দু যুবতী নিখোঁজ হয়। ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ৪০ লক্ষাধিক হিন্দুর ওপর আরও হিংস্র ও বর্বরোচিত নির্যাতনের কিরাও আমরা দুঃখভরে স্মরণ করি। মুক্তিযুদ্ধের পর এই প্রথম আবারও সীমান্তের ওপার গিয়ে প্রায় ৩ লক্ষাধিক হিন্দুকে আশ্রয় নিতে হয়। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা অবর্ণনীয়। আর প্রতিনিয়ত আমাদের সকলের অলক্ষ্যে বাংলার কত যে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ মুখ বুজে নির্যাতন সয়ে চলছে, তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান কেউ দিতে পারবে না। পাশাপাশি ইদানীং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নাম করে ইচ্ছাকৃতভাবে গুজব রটিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নানাভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। বেছে বেছে হিন্দু শিক্ষকদের নামে মিথ্যা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উত্থাপন করে শিক্ষকতায় হিন্দুদের বহুদিনের অৰ্দ্ৰিত সুনাম সচেতনভাবে ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই পথ ধরে ২০১৬ সালে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হিজলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কৃষ্ণপদ মহালী ও অশোক কুমার ঘোষাল, নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের মতো বহু হিন্দু শিক্ষককে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা ফাঁদে ফেলা হয়েছে। ২০১৬ সালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে শ্রীশ্রীসন্তগৌড়ীয় মঠের অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায়কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, একই বছর জুন মাসে ঝিনাইদহে পুরোহিত আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলিকে ও পাবনার হেমায়েতপুর সৎসঙ্গের সেবায়েত নিত্যরঞ্জন পাণ্ডেকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। বর্তমানে হিন্দু সম্প্রদায়কে নির্যাতনের অন্যতম একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হলো ফেসবুক, এবং ফেসবুকে কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে কটূক্তির অভিযোগ। ফেসবুকে কথিত ধর্মীয় কটূক্তির মিথ্যা অভিযোগে অসংখ্যা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে প্রতিনিয়ত ফাঁসানো হচ্ছে। এর সবচেয়ে বড় উদাহারণ ব্রাহ্মবাড়িয়ার নাহিরাগর উপজেলার অসহায় জেলে সম্প্রদায়ের রসরাজ দাস। ২০১৬ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে, ব্রাহ্মবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখির নেতৃত্বে স্থানীয় প্রশাসনের কিছু অংশের সহায়তায় দুই শতাধিক হিন্দু বাড়িঘর ও ১৫টি মন্দিরে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করা হয়। এবং পিটিয়ে আহত করা হয়েছে অর্ধশতাধিক হিন্দু নারী-পুরুষকে। এরই ধারাবাহিকতায়, একই স্টাইলে আবারো হিন্দু নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি ঘটে ২০১৭ সালের ১০শে নভেম্বর রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায়। সেখানেও অভিযুক্ত হতভাগ্য টিটু রায়ের বাড়িসহ এই এলাকার ৮/১০টি বাড়ির ২০ ঘরে আগুন দেওয়া হলে সেগুলো ভষ্মীভূত হয়ে যায়। প্রতিনিয়ত এমনই নির্মম ও অসহায় অবস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে আমাদের। রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাসীন দল হিন্দুর জমি ও বসতবাড়ি দখল করছে নতুবা তাড়িয়ে দিচ্ছে। এরা মনে করছে হিন্দু এদেশে থাকলে লাভ হচ্ছে তাদের ভোট নিশ্চিত থাবো; নতুবা সীমান্ত পার করে দিলে পাবে তাদের জমিজমা। আবার কেউ ভাবছে হিন্দুদের তাড়িয়ে বিপরীতে ভোট ব্যাংক কমাবে, না পারলে নির্যাতন চলবে অব্যাহত। এই আমাদের বর্তমান করুণ ইতিহাস।আমরা কি চিরকাল এভাবে মার খেতে খেতে বিলুপ্ত হয়ে যাব? বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি। আমরা বিশ্বাস করি জন্মদায়িনী জননী এবং জন্মভূমি স্বর্গের থেকেও শ্রেষ্ঠ। রামায়ণে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র ভাই লক্ষ্মণকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন:

অপি স্বর্ণময়ী লঙ্কা ন মে রোচতে লক্ষণ।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী।।
"লক্ষণ এই লঙ্কাপুরী যদিও স্বর্ণময়ী অতীব সুন্দরী, তবুও তা আমার কাছে রূচিকর নয়; কারণ জননী এবং জন্মভূমি স্বর্গ থেকেও অধিকতর শ্রেষ্ঠ।"
ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এদেশের জন্য আমরাই সবচেয়ে বেশি রক্ত দিয়েছি, ত্যাগ স্বীকার করেছি।
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।
মন্তব্যগুলো দেখুনমন্তব্যগুলো লুকান🙁