-->

ধর্ম নির্ণয়ে বেদই একমাত্র প্রমাণ; পুরাণ এবং স্মৃতি সহায়ক মাত্র

বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিছু ব্যক্তি প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদকে পাশ কাটিয়ে শুধু পৌরাণিক গ্রন্থ অথবা বিভিন্ন বাবাগুরুদের লেখা ছড়ার বই, গ...

"নামসংকীতনং যস্য সর্বপাপপ্রণাশনম্"; নাম সংকীর্তনে ভক্ত-ভগবানে মিলন হয়।

"নামসংকীতনং যস্য সর্বপাপপ্রণাশনম্";  নাম সংকীর্তনে ভক্ত-ভগবানে মিলন হয়  সর্বদা ভগবানের সাথে যুক্ত থাকতে হবে। এ যুক্ত যে কোন পথে বা উপায়ে হতে পারে। ভগবানের সাথে বিবিধ উপায়ে যুক্ত থাকা যায়। এ বিবিধ উপায়ের মধ্যে অন্যতম একটি উপায় হল, কীর্তন বা ভগবানের নাম সংকীতন। ভগবানের নাম এবং গুণের মহিমা কীর্তনের মাধ্যমে ভগবানের সাথে যুক্ত থাকা। ভগবানের নাম সংকীর্তনে মনুষ্যের সকল পাপসমূহ সর্বোতভাবে বিনাশপ্রাপ্ত হয় এবং জীবের সকল প্রকার দুঃখের নিবৃত্ত হয়। যিনি ভগবানের নাম করেন, তাঁর কাছে দুঃখ বসবাস করতে পারে না। তিনি ভগবানের পরম আনন্দময় নামে, সদা আনন্দময় হয়ে আনন্দলোকে স্থিত হয়ে মুক্ত হয়ে যান। এ নাম সংকীর্তন সম্পর্কে শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে: নামসংকীতনং যস্য সর্বপাপপ্রণাশনম্। প্রণমো দুঃখশমনস্তুং নমামি হরিং পরম্।। (শ্রীমদ্ভাগবত: ১২.১৩.২৩) "ভগবানের নাম সংকীর্তন পাপসমূহকে সর্বোতভাবে বিনাশ করে।যাঁর পাদপদ্মে আত্মসমর্পণ এবং প্রণতি নিবেদন সর্ব দুঃখকে চিরকালের জন্য নিবৃত্ত করে সেই পরমতত্ত্বস্বরূপ শ্রীহরিকে আমি প্রণাম নিবেদন করছি।" অসংখ্য সাধকেরা ভগবানের নাম এবং মহিমা কীর্তনের মাধ্যমে তাঁর কৃপা পেয়েছেন। এদের মধ্যে কোন কোন সাধক সর্বদা তন্ময় হয়ে ভগবানের নাম কীর্তন করে তাঁর প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষ দর্শনও পেয়েছেন। বঙ্গদেশে ভগবানের নাম এবং তাঁর অচিন্ত্য মহিমা কীর্তনের সর্বশ্রেষ্ঠ দুই ব্যক্তিত্ব হলেন, ভক্ত হরিদাস এবং রামপ্রসাদ সেন। একজন পরমেশ্বরকে কৃষ্ণ রূপে উপাসনা করেছেন, অন্যজন জগজ্জননী কালীরূপে সংগীত এবং কীর্তনের মাধ্যমে উপাসনা করেছেন। যদিও রামপ্রসাদ সেন শাক্ত মতের এবং ভক্ত হরিদাস বৈষ্ণব মতের। কিন্তু দুজনেই বঙ্গের শ্রেষ্ঠ দুই সাধক। কারণ ঈশ্বরকে আমরা যে রূপে বা যে নামেই ডাকি না কেন, তিনি তো এক এবং অদ্বিতীয়। রামপ্রাসাদ সেনের পূর্ববর্তী ভক্ত হরিদাস। ভগবানের নাম জপ এবং কীর্তনের প্রসঙ্গ আসলে বঙ্গদেশে ভক্ত হরিদাসের নাম সর্বপ্রথমে চলে আসে। তিনি তৎকালীন মুসলিম শাসকদের সকল বাঁধা উপেক্ষা করে হরিনাম প্রচারের এক মূর্তিমান বিগ্রহ। তিনি যেন হরিনাম করতে না পারেন এবং তাঁর মুখে পবিত্র হরিনাম বন্ধ করতে মুসলিম কাজি তাঁকে ভয়ংকর শাস্তি প্রদান করে। ভক্ত হরিদাসকে  বিভিন্ন বাজার ঘুড়িয়ে আমৃত্যু বেত্রাঘাতের আদেশ দেয়ে হয়। কাজির নির্দেশে তার লোকেরা নির্মভাবে ভক্ত হরিদাসকে বাইশটি বাজার ঘুড়িয়ে ঘুরিয়ে বেত্রাঘাত করে চলে। কিন্তু এরপরেও ভক্ত হরিদাস হরিনাম ত্যাগ করে না। বরং হরিনামের প্রতি তাঁর আসক্তি আরও বেড়ে যায়। পরবর্তীতে যারা বেত্রাঘাত করেছিলো, তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরে ভক্ত হরিদাস ঠাকুরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। করুণামূর্তি হরিদাস ঠাকুর তাঁর প্রতি অন্যায় অত্যাচার করা সকলকেই ক্ষমা করে দেন। নির্মম হৃদয়ের পাষণ্ডীরা এত বেত্রাঘাত করার পরেও ভক্ত হরিদাসের সামান্য ক্ষতি হয়নি। কারণ তিনি সারা শরীরে বেত্রাঘাতের যন্ত্রণা ভুলে ভুবনমঙ্গল হরিনামে বিভোর ছিলেন। ভগবানের নামের সংকীর্তন প্রসঙ্গে শ্রীমদ্ভগবদগীতায় বলা হয়েছে: সততং কীর্তয়ন্তো মাং যতন্তশ্চ দৃঢ়তাঃ।  নমস্যন্তশ্চ মাং ভক্ত্যা নিত্যযুক্তা উপাসতে৷৷  (শ্রীমদ্ভগবদগীতা:৯.১৪) "দৃঢ়ব্রত ভক্তগণ নিত্য আমার নাম ও গুণকীর্তন করে আমাকে লাভের জন্য দৃঢ় প্রচেষ্টা করেন। তাঁরা অনন্য ভক্তির সাথে আমার প্রতি প্রণত হয়ে সদা যোগযুক্ত হয়ে আমার উপাসনা করে।" রামপ্রসাদ সেন সর্বদা সংগীত বা কালীকীর্তনের মাধ্যমে মায়ের উপাসনা করতেন। তিনি তন্ময় হয়ে মায়ের মহিমা বর্ণন করে স্বরচিত সংগীত করে, তা মায়ের উদ্দেশ্যে গাইতেন। মায়ের মহিমা সংগীতই ছিল তাঁর সাধনা।এ সংগীত নিয়ে অসংখ্য কিংবদন্তী রয়েছে। একবার এক পরমা সুন্দরী নারী তাঁর কাছে সংগীত শুনতে আসে। রামপ্রসাদ সেন তখন স্নান করতে যাচ্ছিলেন। স্নান করে তিনি দেবির নিত্যপূজা করবেন। তাঁর নিত্যপূজার দেরি হয়ে যাচ্ছে দেখে রামপ্রসাদ সেই পরমা সুন্দরী নারীকে কিছু সময়ের জন্য একটু অপেক্ষা করতে বলেন। সনান  সমাপন করে তিনি এসে দেখলেন যে,  সেই নারী অন্তর্হিত হয়ে গেছে। সেই নারীকে এদিক ওদিক খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে তিনি তাঁর চোখ পড়লো চণ্ডীমণ্ডপের দেয়ালে। তিনি বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে দেখলেন সে দেয়ালে লেখা রয়েছে, "আমি অন্নপূর্ণা, বারাণসী থেকে তোমার গান শুনতে এসেছিলাম। এখন আর অপেক্ষা করতে পারিনে।তুমি কাশীতে গিয়ে আমাকে গান শুনিয়ে আসবে।" (স্বামী বামদেবানন্দ ১৯৯৯: ২৪)  সংগীত না শোনানোয় দেবী  হতাশ হয়ে ফিরে গিয়েছেন, এ লেখা দেখে রামপ্রসাদ সেন তখনই অত্যন্ত চঞ্চল হয়ে উঠলেন। কি করবেন তিনি বুঝে উঠতে পারলেন না। দেবী অন্নপূর্ণাকে গান শোনানোর জন্য কাশীধামের উদ্দেশ্যে তিনি যাত্রা করলেন। কিন্তু ত্রিবেণীসংগমে এসে তিনি স্বপ্ন দেখলেন স্বপ্নে দেবী বললেন,কাশী যাইতে হবে না;এখানেই আমাকে গান শোনাও। বারাণসীই আমার একমাত্র নিবাস নয়, আমি সমগ্র জগৎ চরাচরে অবস্থান করি।" তখন রামপ্রসাদ আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠলেন।দেবীর অহৈতুকী করুণার কথা স্মরণ করে রামপ্রসাদ সেনের দুচোখ দিয়ে বয়ে যেতে থাকে আনন্দাশ্রু। ত্রিবেণীতে বসে দেবীর মহিমা কীর্তন করে বহু সংগীত রচনা করে দেবীকে গেয়ে শোনালেন। রামপ্রসাদ সেন গাইলেন: "কাজ কি রে মন যেয়ে কাশী। কালীর চরণ কৈবল্যরাশি। সার্ধ ত্রিশ কোটি তীর্থ মায়ের ও চরণবাসী।  যদি সন্ধ্যা জান, শাস্ত্র মান, কাজ কি হয়ে কাশীবাসী॥ হৃৎকমলে ভাব ব’সে, চতুর্ভুজা মুক্তকেশী ৷ রামপ্রসাদ এই ঘরে বসি পাবে কাশী দিবানিশি॥" (স্বামী বামদেবানন্দ ১৯৯৯: ১৫০) তথ্য সহায়তা: ১. স্বামী বামদেবানন্দ, সাধক রামপ্রসাদ,  কলিকাতা: উদ্বোধন কার্যালয়, জানুয়ারি ১৯৯৯ শ্রীকুশল বরণ চক্রবর্ত্তী সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।
সর্বদা ভগবানের সাথে যুক্ত থাকতে হবে। এ যুক্ত যে কোন পথে বা উপায়ে হতে পারে। ভগবানের সাথে বিবিধ উপায়ে যুক্ত থাকা যায়। এ বিবিধ উপায়ের মধ্যে অন্যতম একটি উপায় হল, কীর্তন বা ভগবানের নাম সংকীতন। ভগবানের নাম এবং গুণের মহিমা কীর্তনের মাধ্যমে ভগবানের সাথে যুক্ত থাকা। ভগবানের নাম সংকীর্তনে মনুষ্যের সকল পাপসমূহ সর্বোতভাবে বিনাশপ্রাপ্ত হয় এবং জীবের সকল প্রকার দুঃখের নিবৃত্ত হয়। যিনি ভগবানের নাম করেন, তাঁর কাছে দুঃখ বসবাস করতে পারে না। তিনি ভগবানের পরম আনন্দময় নামে, সদা আনন্দময় হয়ে আনন্দলোকে স্থিত হয়ে মুক্ত হয়ে যান। এ নাম সংকীর্তন সম্পর্কে শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে:
নামসংকীতনং যস্য সর্বপাপপ্রণাশনম্।
প্রণমো দুঃখশমনস্তুং নমামি হরিং পরম্।।
(শ্রীমদ্ভাগবত: ১২.১৩.২৩)
"ভগবানের নাম সংকীর্তন পাপসমূহকে সর্বোতভাবে বিনাশ করে।যাঁর পাদপদ্মে আত্মসমর্পণ এবং প্রণতি নিবেদন সর্ব দুঃখকে চিরকালের জন্য নিবৃত্ত করে সেই পরমতত্ত্বস্বরূপ শ্রীহরিকে আমি প্রণাম নিবেদন করছি।"
অসংখ্য সাধকেরা ভগবানের নাম এবং মহিমা কীর্তনের মাধ্যমে তাঁর কৃপা পেয়েছেন। এদের মধ্যে কোন কোন সাধক সর্বদা তন্ময় হয়ে ভগবানের নাম কীর্তন করে তাঁর প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষ দর্শনও পেয়েছেন। বঙ্গদেশে ভগবানের নাম এবং তাঁর অচিন্ত্য মহিমা কীর্তনের সর্বশ্রেষ্ঠ দুই ব্যক্তিত্ব হলেন, ভক্ত হরিদাস এবং রামপ্রসাদ সেন। একজন পরমেশ্বরকে কৃষ্ণ রূপে উপাসনা করেছেন, অন্যজন জগজ্জননী কালীরূপে সংগীত এবং কীর্তনের মাধ্যমে উপাসনা করেছেন। যদিও রামপ্রসাদ সেন শাক্ত মতের এবং ভক্ত হরিদাস বৈষ্ণব মতের। কিন্তু দুজনেই বঙ্গের শ্রেষ্ঠ দুই সাধক। কারণ ঈশ্বরকে আমরা যে রূপে বা যে নামেই ডাকি না কেন, তিনি তো এক এবং অদ্বিতীয়। রামপ্রাসাদ সেনের পূর্ববর্তী ভক্ত হরিদাস। ভগবানের নাম জপ এবং কীর্তনের প্রসঙ্গ আসলে বঙ্গদেশে ভক্ত হরিদাসের নাম সর্বপ্রথমে চলে আসে। তিনি তৎকালীন মুসলিম শাসকদের সকল বাঁধা উপেক্ষা করে হরিনাম প্রচারের এক মূর্তিমান বিগ্রহ। তিনি যেন হরিনাম করতে না পারেন এবং তাঁর মুখে পবিত্র হরিনাম বন্ধ করতে মুসলিম কাজি তাঁকে ভয়ংকর শাস্তি প্রদান করে। ভক্ত হরিদাসকে বিভিন্ন বাজার ঘুড়িয়ে আমৃত্যু বেত্রাঘাতের আদেশ দেয়ে হয়। কাজির নির্দেশে তার লোকেরা নির্মভাবে ভক্ত হরিদাসকে বাইশটি বাজার ঘুড়িয়ে ঘুরিয়ে বেত্রাঘাত করে চলে। কিন্তু এরপরেও ভক্ত হরিদাস হরিনাম ত্যাগ করে না। বরং হরিনামের প্রতি তাঁর আসক্তি আরও বেড়ে যায়। পরবর্তীতে যারা বেত্রাঘাত করেছিলো, তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরে ভক্ত হরিদাস ঠাকুরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। করুণামূর্তি হরিদাস ঠাকুর তাঁর প্রতি অন্যায় অত্যাচার করা সকলকেই ক্ষমা করে দেন। নির্মম হৃদয়ের পাষণ্ডীরা এত বেত্রাঘাত করার পরেও ভক্ত হরিদাসের সামান্য ক্ষতি হয়নি। কারণ তিনি সারা শরীরে বেত্রাঘাতের যন্ত্রণা ভুলে ভুবনমঙ্গল হরিনামে বিভোর ছিলেন। ভগবানের নামের সংকীর্তন প্রসঙ্গে শ্রীমদ্ভগবদগীতায় বলা হয়েছে:
সততং কীর্তয়ন্তো মাং যতন্তশ্চ দৃঢ়তাঃ।
নমস্যন্তশ্চ মাং ভক্ত্যা নিত্যযুক্তা উপাসতে৷৷
(শ্রীমদ্ভগবদগীতা:৯.১৪)
"দৃঢ়ব্রত ভক্তগণ নিত্য আমার নাম ও গুণকীর্তন করে আমাকে লাভের জন্য দৃঢ় প্রচেষ্টা করেন। তাঁরা অনন্য ভক্তির সাথে আমার প্রতি প্রণত হয়ে সদা যোগযুক্ত হয়ে আমার উপাসনা করে।"
রামপ্রসাদ সেন সর্বদা সংগীত বা কালীকীর্তনের মাধ্যমে মায়ের উপাসনা করতেন। তিনি তন্ময় হয়ে মায়ের মহিমা বর্ণন করে স্বরচিত সংগীত করে, তা মায়ের উদ্দেশ্যে গাইতেন। মায়ের মহিমা সংগীতই ছিল তাঁর সাধনা।এ সংগীত নিয়ে অসংখ্য কিংবদন্তী রয়েছে। একবার এক পরমা সুন্দরী নারী তাঁর কাছে সংগীত শুনতে আসে। রামপ্রসাদ সেন তখন স্নান করতে যাচ্ছিলেন। স্নান করে তিনি দেবির নিত্যপূজা করবেন। তাঁর নিত্যপূজার দেরি হয়ে যাচ্ছে দেখে রামপ্রসাদ সেই পরমা সুন্দরী নারীকে কিছু সময়ের জন্য একটু অপেক্ষা করতে বলেন। সনান সমাপন করে তিনি এসে দেখলেন যে, সেই নারী অন্তর্হিত হয়ে গেছে। সেই নারীকে এদিক ওদিক খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে তিনি তাঁর চোখ পড়লো চণ্ডীমণ্ডপের দেয়ালে। তিনি বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে দেখলেন সে দেয়ালে লেখা রয়েছে, "আমি অন্নপূর্ণা, বারাণসী থেকে তোমার গান শুনতে এসেছিলাম। এখন আর অপেক্ষা করতে পারিনে।তুমি কাশীতে গিয়ে আমাকে গান শুনিয়ে আসবে।"
(স্বামী বামদেবানন্দ ১৯৯৯: ২৪)
সংগীত না শোনানোয় দেবী হতাশ হয়ে ফিরে গিয়েছেন, এ লেখা দেখে রামপ্রসাদ সেন তখনই অত্যন্ত চঞ্চল হয়ে উঠলেন। কি করবেন তিনি বুঝে উঠতে পারলেন না। দেবী অন্নপূর্ণাকে গান শোনানোর জন্য কাশীধামের উদ্দেশ্যে তিনি যাত্রা করলেন। কিন্তু ত্রিবেণীসংগমে এসে তিনি স্বপ্ন দেখলেন স্বপ্নে দেবী বললেন,কাশী যাইতে হবে না;এখানেই আমাকে গান শোনাও। বারাণসীই আমার একমাত্র নিবাস নয়, আমি সমগ্র জগৎ চরাচরে অবস্থান করি।" তখন রামপ্রসাদ আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠলেন।দেবীর অহৈতুকী করুণার কথা স্মরণ করে রামপ্রসাদ সেনের দুচোখ দিয়ে বয়ে যেতে থাকে আনন্দাশ্রু। ত্রিবেণীতে বসে দেবীর মহিমা কীর্তন করে বহু সংগীত রচনা করে দেবীকে গেয়ে শোনালেন। রামপ্রসাদ সেন গাইলেন:
"কাজ কি রে মন যেয়ে কাশী।
কালীর চরণ কৈবল্যরাশি।
সার্ধ ত্রিশ কোটি তীর্থ মায়ের ও চরণবাসী।
যদি সন্ধ্যা জান, শাস্ত্র মান, কাজ কি হয়ে কাশীবাসী॥
হৃৎকমলে ভাব ব’সে, চতুর্ভুজা মুক্তকেশী ৷
রামপ্রসাদ এই ঘরে বসি পাবে কাশী দিবানিশি॥"
(স্বামী বামদেবানন্দ ১৯৯৯: ১৫০)
তথ্য সহায়তা:
১. স্বামী বামদেবানন্দ, সাধক রামপ্রসাদ, কলিকাতা: উদ্বোধন কার্যালয়, জানুয়ারি ১৯৯৯
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।
মন্তব্যগুলো দেখুনমন্তব্যগুলো লুকান🙁