নমস্কার সবাইকে,
ঐ তেঁতুলতলা থেকে যে সমস্ত ব্যক্তিরা সরাসরি কথা বলছে আর যারা আমাদের বন্ধু হয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে বলছে, "না না দাদা আসলে বিষয়টা এরকম না,বিষয়টা আমাদের বুঝতে হবে,বর্তমান বাস্তবতা বুঝতে হবে।"ঐ তেঁতুলতলার কথা আর ঐ যারা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলছে সকলের একই কথা, ফলাফলটা একই।তার মানে ঐ মানুষগুলো কি চায়? মানুষগুলো কি চায়? বিষয়গুলি একই, শুধু ভাষা ভিন্ন। বৃক্ষ তোমার নাম কি?ফলেই পরিচয়।
আজকে মুক্তিযুদ্ধের সরকার বা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে যদি শক্তিশালী করতে চায় তাহলে মাইনরিটিদের কিছু স্পেশাল রাইট দিয়ে তাদের এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে
আজকে পাশ্ববর্তী পশ্চিমবাংলায় যান,আপনি জানেন সেখানে মাইনরিটিদের ১০% কোটা আছে। শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, সমবায় জাতীয় ব্যাংক, ইমাম মুয়াজ্জিনদের প্রতি মাসে মাসে ভাতা এবং স্পেশালভাবে এমন কোনো সুবিধা নেই যে তারা পায়না। তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার জন্যে সরকারী হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়।আপনি যদি পশ্চিমবাংলার সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটটি গুগলে সার্চ করে দেখবেন। তাদের দেয়া সুযোগ সুবিধার সাথে আপনি আমাদেরটা মেলাবেন। দেখবেন, একজন সংখ্যালঘু পরিমণ্ডলে কোন অবস্থানে আছি আমরা?
আজকে আপনার হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে স্থায়ী একটা কয়েক কোটি টাকার ফান্ড আছে। সেই টাকাটাকে কয়েক কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। তা নিয়েই দেশের যুগান্তরে পত্রিকা নিউজ করেছে, বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য বিশাল সুসংবাদ। সেই কয়েক কোটি টাকার সুদটা কত টাকা হয়? দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠদের জন্যে প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয়েছে প্রত্যেকটি উপজেলায় মডেল মসজিদ প্রকল্প।এর ধারাবাহিকতায় দেশের নাগরিক হিসেবে আমি এক হাজার কোটি টাকা চাচ্ছি না।আপনারা শুধু ২০০ কোটি টাকা আমাদের জন্য বরাদ্দ করেন,১০০ কোটি টাকা দিয়ে আমাদের একটা বিশ্ববিদ্যালয় করে দেন সীতাকুণ্ডে। আর ১০০ কোটি টাকা দিয়ে একটা সমবায় ব্যাংক করে দেন।তাহলেই আমাদের হিন্দুদের অনেক সমস্যার এমনিতেই সমাধান হয়ে যাবে।
গত বাজেটে আমাদের জন্য নাকি ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু, সেই ২০০ কোটি টাকার তো আমরা কিছুই দেখলাম না।আমি জানিনা,সেই বাজেটের টাকাগুলো কোথায় খরচ হয়েছে বা হচ্ছে? আমরা যখন দেখি হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান একজন অন্য ধর্মাবলম্বী। বিষয়টি সামান্যতম হলেও আমাদের খারাপ লাগে। আমার মনে হয় যে, পদাধিকার পদ্ধতি বাদ দিয়ে হিন্দু কল্যাণ ট্রাষ্টের চেয়ারম্যান অবশ্যই একজন হিন্দু থেকে হওয়া উচিত।যেমনভাবে ইসলামী ফাউন্ডেশনে হয়। ইসলামী ফাউন্ডেশনে যত পোস্ট সার্কুলার করা হয়,সেই পোস্টের সার্কুলারের নিচে লেখা থাকে, ইসলাম ধর্ম পালনকারী একজন ব্যক্তিই আবেদন করতে পারবে। যে কেউ চাইলেই সেখানে আবেদন করতে পারবে না। এই যে প্রাক-প্রাথমিক মন্দির বিষয়ক শিক্ষা কার্যক্রম আমাদের ৬৪ জেলায় চলছে,এখানে আপনি দেখুন তো কয়জন হিন্দু চাকরীজীবী ওখানে আছে? অর্ধেক মানুষও হিন্দু সম্প্রদায়ের থেকে নেই। এরকম আরও অনেক কথা আছে। যা সারাদিন বসে বলেও শেষ হবে না।
আমরা বলতে চাই, বর্তমানে ক্ষমতাসীন আছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার। আমরা নিজেরাও তার অংশ। আমরা চাইবো এই সরকার আবারও ক্ষমতায় আসুক। তার আগে ইলেকশন পূর্ববর্তী আগামী যে সময়টা,এই সময়টাতে আমাদের অত কিছু চাইনা শুধু দুটি দাবি পুরণ করতে হবে। এ দুটি দাবি হল, আমাদের একটা সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং একটা মাইনরিটি কমিশন দিতেই হবে।এটা এমন কিছু না,একটা দেশের সরকারের জন্য।
১০০ কোটি টাকা তেমন কিছু না,এটা যারা সরকারের উচ্চপর্যায়ে আছেন, তারা জানেন।একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইজিলি(Easyly) করা যায়।আজকে সংখ্যাগুরুদের ধর্মীয় শিক্ষার জন্যে এত বিশ্ববিদ্যালয় দেশব্যাপী। দেশব্যাপী মাদ্রাসাগুলি আছে।ইসলামি ইউনিভার্সিটি হয়েছে,বেসরকারি ইসলামি ইউনিভার্সিটি আছে, এরপরে আবার নতুন করে আরবি ইসলামি ইউনিভার্সিটি করা হয়েছে, আপনারা দেখেছেন। আর আমাদের জন্যে? আমি যেই রুমটাতে বসি সেই রুমটাতেই ছিলেন আরবি ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর, তিনি ভাইস চ্যান্সেলর হয়ে চলে যাওয়াতে ওনার রুমটাই আমাদের সাথে ইন্টারচেঞ্জ হয়েছে।
আপনাদের কি একবারও মনে হয় না যে,এই মানুষগুলো,এই সংখ্যালঘু মানুষগুলো তাদের কাছে প্রতিবার ভোটের জন্য আসি,তাদের জন্য খালি মুখসর্বস্ব কথা না বলে কিছু করা দরকার।দুর্গাপূজায় কয় টন চাল বরাদ্দ পেল, এটা দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায় উপকৃত হয় না।দুর্গাপূজায় এই বছর এত এত পূজা বেড়েছে আমাদের রাজনীতিবিদরা গর্ব করে বলে। আরে বাবারে, এত পূজা বেড়েছে এটা হিন্দুদের জন্য গর্বের নয় এটা আমাদের জন্য লজ্জার একটা বিষয়। আজকে এক কিলোমিটার জায়গার মধ্যে ২০ টা পূজা হয়, এটা আমাদের হিন্দুদের গর্বের না,এটা আমাদের লজ্জার বিষয় যে, আমাদের হিন্দুদের ইউনিটি(Unity) নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
আজকে এত পূজা হচ্ছে, পূজা উপলক্ষে সরকারী চাল বরাদ্দ দেয়া হয়, সেই চাল কোথায় যাচ্ছে? কি কাজে লাগছে? সব ডেকোরেশনের পেছনে চলে যাচ্ছে,সব লাইটিংয়ের পেছনে চলে যাচ্ছে।এই যে দৃশ্যমান পূজার সময় এত পরিমাণ চাল বরাদ্দ হয়, সেই চালেরও একটা অংশ অন্যদের কাছে চলে যাচ্ছে, তা আমরা জানিনা। উপজেলা অফিস থেকে চাল নেয়ার সময় অনেকটা বাধ্য করানো হয় যে, আপনি চাল সরাসরি নিয়ে আসতে পারবেন না।ওখানে সেল(Sell) করতে হবে।তারা যে দাম নির্ধারণ করে দেয় ঐ দামেই আপনাকে বিক্রি করে টাকা নিয়ে আসতে হবে।আপনি যদি চান টাকা না নিয়ে চাল এমনি নিয়ে আসতে, তখন আপনি দেখবেন আপনাকে হাজার রকমের ফ্যাকড়ায়(বিড়ম্বনা) ফেলে দিবে এই চালের সাথে কিছু মধ্যসত্ত্বভোগীরা।আমি আসলে আজকে অনেক মনের দুঃখে এ কথাগুলো বলছি।বর্তমান বাস্তবতায় আসলে নজরুলের ভাষায় বলতে হয় যে-
বন্ধু গো, আর বলিতে পারি না,বড় বিষ-জ্বালা এই বুকে!দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি,তাই যাহা আসে কই মুখে।রক্ত ঝরাতে পারি না ত একা,তাই লিখে যাই এ রক্ত-লেখা,বড় কথা বড় ভাব আসে না ক’ মাথায়,বন্ধু, বড় দুখে!অমর কাব্য তোমরা লিখিও,বন্ধু, যাহারা আছ সুখে!
যারা সুখে আছে তারা অনেক কথাই বলতে পারে,তারা অনেক সুন্দর সুন্দর পদ্য লিখতে পারে।কিন্তু,আমি সুখে নাই,আমার অস্তিত্বের সংকট।আমি যদি আমার নিজেরই একটা উদাহরণ দেই, বোঝানোর সুবিধার্থে। আমার পরিবারের পাঁচজন উকিল এবং তারা সবাই আওয়ামী উকিল রাজনীতির সাথে যুক্ত। এতজন উকিল থাকার পরও আমি যখন দেখি আমার বাড়ির একটা অংশ নিয়মিতভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে।আজকে আমার হয়ত এবিলিটি(Ability) আছে, আমি তাদের তুলে দিতে পারছি, কিন্তু কালকে আমার এবিলিটি(Ability) থাকবে কিনা আমি ঠিক জানিনা। বাড়িতে এতজন উকিল থাকার পরও যখন দেখি যে, আমি আমার বাড়িটা ঠিকমত রক্ষা করতে পারছি না। তখন একটু হলেও ভাবায়। যদি মাদারীপুর শহরে কেউ যান, তবে শহরের মধ্যে হয়ত বড় বাড়িটাই আমাদের বাড়ি। যার নাম ঠাকুরবাড়ি।সবাই মোটামুটি চেনেজানে।তাহলে আমি যদি আমার নিজেকে দিয়ে উদাহরণ দেই যে, এতগুলো উকিল থাকার পরেও, এত সচেতন মানুষ থাকার পরেও, এতগুলো শিক্ষিত মানুষ থাকার পরেও, ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে লোকজন থাকার পরেও যদি আমার নিজের ঘরবাড়ি রক্ষা করতে আমার জানপ্রাণ বের হয়ে যায়; তবে রুট(root) লেভেলের একজন সংখ্যালঘুর কি পরিমানে সমস্যা হতে পারে এটা একটা বাচ্চা মানুষও বোঝে।
সংখ্যালঘুদের ভূমি দখল বিষয়টি নিয়ে যারা কাজ করে তাদের মধ্যে অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকাত স্যার অন্যতম। তিনি (০৫. ০৯. ২০১০) প্রথম আলোতে বলেন, "বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় এ দেশে ৪৫ শতাংশ ভূমির মালিক ছিল হিন্দুরা। অর্পিত সম্পত্তি আইনের সুযোগ নিয়ে অনেকে এই জমিগুলো গ্রাস করেছে। ফলে দেশ ছাড়তে হয়েছে অনেক হিন্দু পরিবারকে।"
আজকে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন হয়েছে। প্রথম আলোতে গতবছর রিপোর্ট হয়েছে, কোন মানুষ সম্পত্তি বুঝে পাইনি।প্রথম আলোর রিপোর্টটি আপনারা আশাকরি দেখেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অর্থনীতিবিদ আবুল মাকসুদ স্যারের গবেষণার উপরে ভিত্তি করে একটি বই আছে, "বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বঞ্চনা: অর্পিত সম্পত্তির সাথে বসবাস"। আপনারা বইটি পড়ে দেখবেন। গা শিউরে উঠবে হিন্দুদের সাথে বঞ্চনার ভয়াবহতা দেখে।
অধ্যাপক আবুল বারকাত স্যারেরই আরেকটি বই আছে, ‘পলিটিক্যাল ইকোনমি অফ রিফরমিং এগ্রিকালচার-ল্যান্ড-ওয়াটার বডিস ইন বাংলাদেশ’ বইটিতে তিনি বলছেন, প্রতিদিন গড়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৬৩২ জন মানুষ দেশ ত্যাগ করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে আর তিনদশক পরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অস্তিত্বই থাকবে না।
দুঃখ লাগে,আপনি দেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর রিপোর্ট দেখবেন, যেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ১৫ টি জেলা থেকে হিন্দুদের সংখ্যা হু হু করে কমে যাচ্ছে।আপনি কি জানেন সেই ১৫ টি জেলা কোন কোন জেলা?যে জেলাগুলোকে আওয়ামীলীগের ঘাটি বলা হয় সেই গোপালগঞ্জ,মাদারীপুর সেরকম প্রত্যেকটা জেলা থেকে হিন্দুদের সংখ্যা হুহু করে কমে যাচ্ছে।আপনি যদি দেখেন,আজকে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ কেন হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাওয়ার প্রথম তালিকায় থাকবে? তবে কি প্রদীপের নিচেই অন্ধকার? আপনারাই বিষয়গুলো বুঝে নিন। এগুলো অনেক কথা, যা খুলে বলা সম্ভব না।
২০০১ ও ২০১১ সালের আদমশুমারির পরিসংখ্যান তুলনা করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট) বলছে, গত ১০ বছরে কমপক্ষে নয় লাখ হিন্দু দেশ ত্যাগ করেছেন।
আপনি যখন বাস্তবতার মধ্যে না ঢুকবেন,আপনি অনেক কথা বলতে পারবেন। বাস্তবতা এক ভিন্নতর অভিজ্ঞতা। বাস্তবতা আপনাকে রাত্রে ঘুমাতে দিবে না। আপনি যখন ফুল দিয়ে পুষ্পশয্যা করবেন, কবিতা লিখবেন,পদ্য লিখবেন,তেলবাজি করবেন এবং আপনি দেখবেন আপনি আপাত ভাল থাকতে পারবেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর তৈল নামক একটা প্রবন্ধ আছে। সেখানে তিনি তৈলপ্রিয়তা তৈলমর্দনকারীদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে বলেছেন, "মনে রাখা উচিত, এক তৈলে চাকাও ঘোরে আর তৈলে মন ফেরে।"
আমাদের যেখানে অস্তিত্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে, সেখানে আমরা দিনরাত্রি দালালি করছি। আমাদের অস্তিত্ব থাক বা না থাক দালালি করেই চলছি এবং দালালি করার পক্ষে সাফাই গেয়ে বলছি, আমরা দালালি করবোই, করবো।হ্যাঁ,আমরা দালালি করবো ঠিক, আছে। সমস্যা নেই।যদি দালালি করে হলেও, আমাদের এই অধিকারের বিষয়গুলোর সমাধান করে আনতে পারেন, তবে দালালি করলেও সমস্যা নেই। আপরা আপনাদের সম্প্রদায়ের মাথায় তুলে রাখব।
আমার পূর্ববর্তী বক্তা,উনি একজন পরম শ্রদ্ধেয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।উনি এইমাত্র বক্তৃতায় বলেছেন যে, হিন্দুদের হেবা বা দানপত্র আইন এটা অতিদ্রুতই পাশ হবে।আমার খুব দুঃখ লাগলো, এ হিন্দু দানপত্র আইনটা অলরেডি কয়েকবছর আগেই পাশ হয়ে গেছে। সেটা তিনি জানেন না। তিনি বললেন যে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলাতেই, প্রধানমন্ত্রী তাকে আস্বস্ত করেছেন আইনটি শীঘ্রই পাশ হবে। তার প্রতি প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, দাদা এতবছর আগে পাশ হয়ে যাওয়া আইনটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অন্ততপক্ষে আপনার জানা উচিত ছিল।
আমি প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল করি। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের জন্য রাজনৈতিক দল করি না,আমি আমার অস্তিত্বের জন্য করি।কোনো রাজনৈতিক দলের ভোটব্যাংকের জন্য আমি দল করিনা।আমি আমার নিজের অস্তিত্বের জন্য করি।আমি একাত্তরের মূল্যবোধের জন্যে রাজনীতি করি। অসাম্প্রদায়িক একটা মুক্ত আকাশের জন্যে রাজনীতি করি।কারণ, আমরা দেখেছি যে দিনশেষে মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর চেহারা।সম্পত্তি লুটপাটের ক্ষেত্রে সব ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে একই কথা। একই কথা।ইনিয়ে বিনিয়ে মিনিয়ে একই কথা।
তরুণ বন্ধুরা যারা সামনে আছেন তাদের বলব, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। সামনে দুর্গাপূজা চলে এসেছে। দুর্গাপূজাতে সাত্ত্বিক পূজার প্রচারণার সাথে যুক্ত থাকবেন।কেউ প্লিজ পূজার মধ্যে অশ্লীলতা করবেন না।আপনি নিজের মায়ের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে, মদ খেয়ে,কুরুচিপূর্ণ নৃত্য করেন না, এটা করেন না, সেটা করেন না। তবে জগৎ মাতার সামনে কি করে এগুলো করতে পারেন? প্রশ্ন রইলো। ভেবে দেখবেন।
(২০১৮ সালের ২৯ জুন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জে এম সেন হলে, শারদাঞ্জলি ফোরামের আয়োজনে সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে এ বক্তব্যটি দেই। কথাগুলোর ভাববস্তু তৎকালীন সময়ের। আমি শতশত বক্তব্য দেশের বিভিন্ন স্থানে দিয়েছি, যার অধিকাংশই কালের গর্বে হারিয়ে গেছে। দুই-একজন হয়তো রেকডিং করেছে, সেগুলো রয়ে গেছে। এ বক্তব্যটি অডিও রেকর্ড থেকে লিখে আমাকে ম্যসেঞ্জারে দিল উদয় নামে রংপুর কারমাইকেল কলেজের একটি ছাত্র। মনে হল, কথাগুলো তৎকালীন সময়ের হলেও এর কিছুকথা বর্তমানেও প্রাসঙ্গিক। তাই শেয়ার দেয়া।)
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।