-->

ধর্ম নির্ণয়ে বেদই একমাত্র প্রমাণ; পুরাণ এবং স্মৃতি সহায়ক মাত্র

বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিছু ব্যক্তি প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদকে পাশ কাটিয়ে শুধু পৌরাণিক গ্রন্থ অথবা বিভিন্ন বাবাগুরুদের লেখা ছড়ার বই, গ...

"ধর্মো রক্ষতি রক্ষিতঃ"; ধর্ম রক্ষার্থে সাধুদের ভূমিকা অগ্রণী।


খুবই দুঃখজনকভাবে বলতে হচ্ছে, বর্তমানে গৃহীদের ন্যায় সাধুরাও অত্যন্ত ভোগসর্বস্ব হয়ে যাচ্ছে। যা বাংলার বিশেষ করে বাংলাদেশে ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্যে "মরার উপরে খাড়ার ঘায়ের ন্যায়" বলে প্রতীয়মান হচ্ছে দিনেদিনে। অবশ্য এ সকল ঘটনার ভবিষ্যতবাণী আমাদের শাস্ত্রে বহু পূর্বেই লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। শ্রীকৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব কলিকালের সাধুদের নিয়ে প্রসঙ্গে শ্রীমদ্ভাগবতের দ্বাদশ স্কন্ধের "কলি-ধর্ম-কথা" নামক দ্বিতীয় অধ্যায়ে সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন। তিনি বলেছেন:
লিঙ্গমেবাশ্রমখ্যাতাবন্যোন্যাপত্তিকারণম্ ।
অবৃত্ত্যা ন্যায়দৌর্বল্যং পাণ্ডিত্যে চাপলং বচঃ।।
(শ্রীমদ্ভাগবত :১২.২.৪)
"ব্রহ্মচারী, সন্ন্যাসী আদির পরিচিতি বস্ত্র, দণ্ড- কমণ্ডলুতেই সীমিত হয়ে যাবে। অপরের বাহ্য প্রতীক গ্রহণই আশ্রমে প্রবেশের স্বীকৃতি পাবে। উৎকোচ, অথবা ধনসম্পদ দিতে অপারগ ব্যক্তি ন্যায়ালয়ে যথার্থ বিচার পাবে না। বাকচাতুর্য পাণ্ডিত্যের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়াবে।"
এর মধ্যে দুটি বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়।

কলিকালে সাধুদের ভেতরের সাধুত্ব নয় ; তাদের বাইরের বেশভূষা দিয়েই শুধুমাত্র তারা যে সাধু এটা চেনা যাবে।অর্থাৎ গৈরিক পোশাক এবং দণ্ড কমণ্ডলু দেখেই শুধু সাধু সন্ন্যাসীদের চেনা যাবে।সন্ন্যাসীদের আশ্রমগুলি হবে গৃহিদের আবাসস্থলের মত। গৃহীদের মত সকল প্রকার বিলাসিতার ভোগ্যপণ্যে পরিপূর্ণ থাকবে সন্ন্যাসীর গৃহ, দেহ এবং আশ্রম।
ভারতের পুরীতে গিয়ে শ্রীচৈতন্যদেবের স্মৃতিবিজড়িত গম্ভীরাতে গিয়েছিলাম।এ গম্ভীরাতেই শ্রীচৈতন্যদেব তাঁর জীবনের শেষের প্রায় বারো বছর সময় আমৃত্যু কাটিয়েছিলেন। শ্রীচৈতন্যদেবের স্মৃতিবিজড়িত স্থানটি দেখে আমি হতবাক হলাম। শ্রীচৈতন্যদেব ছিলেন ছয় ফিটের উপরে একজন আজানুলম্বিত দীর্ঘদেহী ব্যক্তি। তাঁর সমান দৈর্ঘ্যপ্রস্থের একটা ছোটকক্ষে তিনি থাকতেন। সে কক্ষে তাঁর সম্বল ছিল শচীমায়ের দেয়া একটা কাঁথা, কলার খোল দিয়ে তৈরি করা একটা ছোট একটি বালিশ এবং সন্ন্যাসীর দণ্ড -কমণ্ডলু। একই বিষয় আমরা শ্রীরূপ-সনাতনাদি ষড় গোস্বামীর জীবনেও দেখি। তাঁরাও ছিলেন বিনয়-কৃচ্ছ্রতার মূর্তপ্রতীক।
কিন্তু বর্তমান সন্ন্যাসী, সাধু-সন্ত এবং গুরুরা অত্যন্ত গদিবালিস সর্বস্ব হয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, তারা নিজেদের আত্মপ্রচার করতে করতে তাদের আর ধর্মপ্রচারের একদণ্ড সময় নেই। যে ধর্মপ্রচার করতে তারা সন্ন্যাস নিয়েছে, সেই ধর্মপ্রচারই হয়ে গেছে তাদের কাছে চতুর্থ বিষয়। যা নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই। ইউরোপ আমেরিকা থেকে আসা খ্রিস্টান মিশনারীরা তাদের আধুনিক ভোগ বিলাস পরিত্যাগ করে যেভাবে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার করে; সেভাবে আমাদের সাধু সন্ন্যাসীদের প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে আমাদের ধর্ম প্রচার করতে আমরা সচরাচর দেখি না। অবশ্য এর মধ্যে দুই-চারজন ব্যতিক্রমী সাধু সন্ন্যাসী আছেন, যারা চেষ্টা করে ধর্ম প্রচার করতে। তাদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও, তাদের মঠ-আশ্রমের উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশনা এবং অনুমতির কারণে তারা কাজ করতে পারেন না।
খুবই দুঃখজনকভাবে বলতে হয়, হিন্দু সম্প্রদায় হল সেই সরকারি দীঘি, যে দীঘিতে সবাই আসে ধর্মান্তর নামক মাছ শিকার করতে। প্রতিদিনই বিধর্মী ধর্ম ব্যবসায়ীদের শিকারে পরিণত হয়ে হিন্দু সম্প্রদায় এ ভূখণ্ডে দিনেদিনে ক্ষয়িষ্ণু হয়ে যাচ্ছে। আমাদের সমাজের ব্যবসায়ীদের দানকৃত মাখনগুলি খেয়ে, গদিবালিশে সুয়ে, পেট দুলিয়ে, ব্যক্তিকেন্দ্রিক গুরুব্যবসা করে যাচ্ছে কিছু ভণ্ডরা। এদের যথাসম্ভব প্রত্যাখ্যান প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।
আমাদের বুঝতে হবে বিপদকালে ধর্মের রূপ পরিবর্তিত হয়। ধর্ম আর আপদধর্ম সম্পূর্ণ এক নয়, কিন্তু ধর্মের সাথেই অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত আছে আপদধর্ম। চরম বিপদকালে ধর্মের রূপ কিছুটা পরিবর্তিত হয়। তাই আপদধর্মের প্রধান উদ্দেশ্যই আত্মরক্ষা, জাতিরক্ষা। দেশে এখন হিন্দুদের জন্যে চরম আপদধর্মকালীন অবস্থা বিরাজ করছে। তাই আমাদের উচিৎ আপাতত বিশ্ব-নাগরিক হয়ে সমগ্র বিশ্ব উদ্ধারের অবাস্তব কল্পনার জগতে বিচরণ না করে বাস্তব জগতে জাতি রক্ষার্থে সামান্য হলেও আত্মনিয়োগ করা। নচেৎ আমাদের ভাগ্যাকাশে বর্তমানের থেকেও ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে।
এ সমস্যা সমাধানে সর্বাগ্রে ভূমিকা হওয়া উচিৎ হিন্দু সাধু-সন্তদের। কারণ তারা সবকিছু ত্যাগের মাধ্যমেই ঈশ্বরের এবং ঈশ্বরের প্রবর্তিত ধর্মের শরণ নিয়েছেন, আত্মমুক্তি এবং সর্বজীবের কল্যাণের আকাঙ্ক্ষায়। কিন্তু তারা গদি-বালিসে সুয়ে বসে, এসি গাড়িতে, এসি রুমে থেকে কতটা জীবকল্যাণে কাজ করেন তা আমার কাছে ঠিক পরিষ্কার নয়। আমাদের সাধুদের হাঁটুতে বাতের ব্যথা, ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা। শরীরের ভাঁজে ভাঁজে তাদের প্রতিনিয়ত সমস্যা । অধিকাংশই রোগী, রোগ সেরে গেলে বড়জোর তারা ভোগী হবেন, কিন্তু যোগী কখনোই নয়। মুখে মুখেই শুধুমাত্র কামিনী-কাঞ্চন ত্যাগের লেকচার। যা বাস্তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের জীবনে ছিটেফোঁটা নেই।
হিন্দু সাধুদের দেখলে মনে হয় ধর্মের সাম্যের বাণী প্রচার এবং অবহেলিত মানুষের রক্ষা নয়; সর্বধর্মের ঠিকাদারিই যেন তাদের একমাত্র কাজ। নিজের গায়ে কাপড় নেই, নিজের পরিবারের গায়ে লজ্জা নিবারণের সামান্য কাপড় নেই, এ নিয়ে তাদের কোন সামান্যতম চিন্তা নেই।তাদের চিন্তা শুধুমাত্র লোকদেখানো পৃথিবী উদ্ধার। কিভাবে নিজের সম্প্রদায়ের থেকে টাকা তুলে লোকদেখানো সর্বধর্ম সমন্বয়ের নামে পৃথিবী উদ্ধার করে 'মহান' খেতাব প্রাপ্ত হবে -এ নিয়েই তাদের যত চিন্তা। থাকুক না হয় নিজসম্প্রদায়ের ছেলে মেয়েরা বস্ত্রহীন উলঙ্গ; তাতে কি আসে যায়? তাদের লোকদেখানো ধর্মের অভিনয় তো চলছে।অথচ আমাদের সাধু-সন্ন্যাসীরা ভুলে যান মহাভারতের বনপর্বের ধর্ম রক্ষার্থে হিরন্ময় উক্তিটি। সেখানে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, আমরা যদি ধর্মকে রক্ষা করি তবে ধর্মই আমাদের রক্ষা করবে; পক্ষান্তরে যদি আমরা ধর্মকে রক্ষা করতে না পারি তবে আমরা সমূলে বিনাশ হয়ে যাব।
যুধিষ্ঠির উবাচ।
ধর্ম এব হতো হন্তি ধর্মো রক্ষতি রক্ষিতঃ।
তস্মাদ্ধর্মং ন ত্যজামি মা নো ধর্মো হতো বধীৎ।।
(মহাভারত: বনপর্ব, ২৬৭.৯২)
"ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির বলেন, যে ব্যক্তি ধর্ম নষ্ট করে, ধর্মই তাকে সমূলে বিনষ্ট করে দেয়। পক্ষান্তরে যিনি ধর্মকে রক্ষা করেন, ধর্মই তাকে সর্বদা রক্ষা করেন। তাই আমি (ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির) ধর্মকে কখনও পরিত্যাগ করি না। কেন না, ধর্ম যদি আমার দ্বারা বিনষ্ট হয়, তবে সে ধর্মই আমাকে সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট করে দিবে।"
আগে নিজেকে বাঁচতে হবে। আপদধর্মকালে আমাদের বেঁচে থাকার পদ্ধতিও আমাদের শাস্ত্র শিখিয়ে দিয়েছে- সাম, দান, ভেদ এবং দণ্ড (মহাভারত : আদিপর্ব, ১৩৫ অধ্যায়)।আপদকালে বা রাজনৈতিক পরাধীনতায় বেঁচে থাকাই ধর্ম। কথাগুলো আমাদের ধর্মের প্রচারক সাধু-সন্তেরা আমাদের শেখায়নি। আমাদের এত লোক দেখানো সর্বধর্ম সমন্বয়ের প্রয়োজন কি? আমাদের সাধুদের উচিত যে কারণে তারা সন্ন্যাস নিয়েছেন সেই কারণটিই আগে বাস্তবায়ন করা। তারা সন্ন্যাস নিয়েছেন ঈশ্বরের, ধর্মের জন্য ; সেই ধর্মই যদি তারা প্রচার না করেন তবে এত লক্ষলক্ষ সাধু-সন্ন্যাসী দিয়ে আমাদের সম্প্রদায়ের কি কল্যাণ হবে? ধর্মের শঙ্খরবে আহ্বান প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন:
"ধর্ম যবে শঙ্খরবে করিবে আহ্বান
নীরব হয়ে নম্র হয়ে পণ করিয়ো প্রাণ।
মুক্ত করো ভয়, দুরূহ কাজে নিজেরি দিয়ো কঠিন পরিচয়।।"
প্রাচীনকালের ঋষি-মুনিরা ছিলেন যোগী, তাঁরা নিয়মিত হঠযোগ-রাজযোগ করতেন। সাধনা করতেন। নিত্য নৈমিত্তিক বৈদিক উপাসনাও করতেন। তাঁদের শরীরে ব্রহ্মতেজের সাথে সাথে যুগপৎভাবে ক্ষাত্রতেজও ছিলো। রাজা- মহারাজারাও তাঁদের কথা মেনে চলতেন, সন্মান করতেন, শ্রদ্ধা করতেন এবং সর্বোপরি ভয়ও পেতেন। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমানের কিছু সাধুসন্তদের দেখলেই মনে হবে এরা নির্দিষ্ট কোন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীদের ভাড়া করা দালাল। নেতাদের তেল দিতে দিতেই সাধুদের দিন চলে যায়। সাধু নামধারী সকলেই সাধু নয়। এ সাধু প্রসঙ্গে শ্রীমদ্ভাগবতের তৃতীয় স্কন্ধে ভগবান কপিল তাঁর জন্মদাত্রী জননী দেবাহূতিকে বলেন:
তিতিক্ষবঃ কারুণিকাঃ সুহৃদঃ সর্বদেহিনাম্।
অজাতশত্রবঃ শান্তাঃ সাধবঃ সাধুভূষণাঃ।।
(শ্রীমদ্ভাগবত:৩.২৫.২১)
" যিনি সহিষ্ণু, করুণায় যার হৃদয় পরিপূর্ণ এবং যিনি সকলের সুহৃদ। যিনি কাউকে শত্রুতার দৃষ্টিতে দেখেন না, সর্বদাই যিনি শান্ত স্বভাবের, যিনি সকল প্রকারের সদগুণের দ্বারা বিভূষিত হয়ে শাস্ত্রের নির্দেশ অনুসারে আচরণ করেন -এ সকল লক্ষণ যাঁর মাঝে অবস্থিত তিনিই সাধু নামে অভিহিত। "
ভণ্ড সাধু-সন্ন্যাসীরা গুরুবাদের নামে গ্রাফিক্স ডিজাইন করে পদ্মের উপরে বসে বিভিন্ন সং ভং চং সেজে আদতে হিন্দুসমাজকে ঠকাচ্ছে। ধর্মের নামে নিরবচ্ছিন্ন বিনা পুঁজির ব্যবসা করছে। যাদের কাজ ছিল হিন্দু সমাজকে একত্রিত করা, অভয় দেয়া, মার্গদর্শন করা ; উল্টো তারাই ধর্মের উদ্ভট বানোয়াট অপব্যাখ্যা দিয়ে দিয়ে হিন্দুদের দলে দলে বিভ্রান্ত করছে, বিভক্ত করছে। তবে ব্যতিক্রম আছে গুটিকয়েক সৎগুরুরা। সাধু-সন্তদের উচিত অহেতুক সর্বধর্ম সমন্বয়ের গীত গাওয়া বাদ দিয়ে, হিন্দুদের একত্রিত করা। হিন্দুজাতি গঠন করা। আমাদের মনে রাখতে হবে, দূর্বলে সবলে কখনই বন্ধুত্ব হয় না, বন্ধুত্ব হয় দূর্বলে দূর্বলে অথবা সবলে সবলে। দূর্বলে সবলে যদি বন্ধুত্বও হয়, তবে বুঝতে হবে সবল দূর্বলের প্রতি দয়া করছে, করুণা করছে।আর দূর্বলের ক্ষমা প্রদর্শন করা বা না করা একই ; সমাজে এর কোনই মূল্য নেই।
গত দেরশো বছরে বাংলার সাধু-সন্তরা বাঙালি হিন্দুদের যদি সত্যিকারের ধর্মীয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাম্যের শিক্ষা দিতে পারতো তাহলে বাঙালি হিন্দুদের ইতিহাস অন্যপ্রকার হতো। হিন্দুদের আর এভাবে মার খেয়ে, জবাই হয়ে, বাস্তুভিটাচ্যুত হয়ে,উপাস্য দেবতার প্রতিমা ধ্বংস হতে দেখে জনসংখ্যা শূন্যের অভিমুখে যেতে হতো না। তবে স্বামী বিবেকানন্দ, স্বামী প্রণবানন্দ সহ আরো অনেক সত্যিকারের জাতির আলোক পথের পথিক সাধু-সন্ন্যাসীরাও প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে তাঁদের কর্মে।আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা তাঁদের বাণী অনুসরণ করে তাঁদের পথে চলতে পারিনি। তাঁদের ছবিই শুধুমাত্র দেয়ালে শোভাপায়।
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।
মন্তব্যগুলো দেখুনমন্তব্যগুলো লুকান🙁