-->

ধর্ম নির্ণয়ে বেদই একমাত্র প্রমাণ; পুরাণ এবং স্মৃতি সহায়ক মাত্র

বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিছু ব্যক্তি প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদকে পাশ কাটিয়ে শুধু পৌরাণিক গ্রন্থ অথবা বিভিন্ন বাবাগুরুদের লেখা ছড়ার বই, গ...

অধিকারী বিহীন বেদের জ্ঞান, কেউ দেখেও দেখতে পায় না।

বেদের জ্ঞান সবাই ধারণ করতে পারেননা, যদি সে যোগ্য অধিকারী না হয়। যিনি অধিকারী তাঁর কাছে বেদমাতা স্বয়ং প্রকাশিত হন এবং তাকে মহিমান্বিত করেন। অনেকেই বেদকে কোরান বা বাইবেল সহ অন্য ধর্মগ্রন্থের মত একটি গ্রন্থ মনে করেন। কিন্তু বেদের চর্চা না থাকার কারণে তাদের অধিকাংশই জানেন না যে, বেদ নামের গ্রন্থটি অসংখ্য গ্রন্থের সমষ্টি। জাগতিক আধ্যাত্মিক বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়ের উপরে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রন্থাগার। মানবজাতির জ্ঞানজগতের চিকিৎসাবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যকরণ, ছন্দ, যুদ্ধবিদ্যা, স্থাপত্যবিদ্যা, সংগীত, পারিবারিক আইন, রাষ্ট্রীয় সামাজিক আইন, জ্যামিতি, বিভিন্ন বিধিব্যবস্থা, মাঙ্গলিক লোকাচার, আধ্যাত্মিক জ্ঞান, আত্মতত্ত্ব সহ প্রত্যেকটি বিষয়ের উপরে আলাদা আলাদা গ্রন্থ আছে। আকারে প্রকারে এবং বিষয়বস্তুগত বৈচিত্র্যময়তার কারণে অনেকেই বেদ বুঝতে পারেন না। আবার অনেক গ্রন্থ হওয়ার কারণে কোথা থেকে শুরু করবেন তাও বুঝতে পারেন না। বেদ বুঝতে হলে প্রথমত তাঁকে অধিকারী হতে হবে। সেই ব্যক্তিই অবশ্যই এ জন্মে তো বটেই, পূর্ববর্তী জন্মেরও সুকৃতি থাকতে হবে। এ সুকৃতি না থাকলে, সে বেদের জ্ঞান কখনই উপলব্ধি করতে পারবে না। গুরুমুখী পরম্পরাগত শিক্ষার মাধ্যমেই বেদের জ্ঞানের আবহমানকাল থেকেই চর্চা হয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে সেই গুরুমুখী শিক্ষা পরম্পরার ছেদ হয়ে যাওয়ায় আমরা অনেকেই আজ বেদ পড়েও বুঝতে পারি না। এরপরেও আমাদের বেদের পথে ফিরতে হবে। কারণ, বেদের উপরেও সনাতন ধর্ম ও সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত। বেদের পথে চলার বিষয়টি বেদমন্ত্রেই খুব সুন্দর করে উপমা দিয়ে বলা আছে। সেখানে বলা আছে, যারা বেদবিদ্যা ছেড়ে পুষ্পফলবিহীন অসার বাক্যের মোহময় পথে অগ্রসর হয়, তারা দুগ্ধহীন কাল্পনিক মায়াময় গাভীর পিছনে ছুটে শুধুমাত্র নিজের জীবনকেই ধ্বংস করেন। উত ত্বঃ পশ্যন্ন দদর্শ  বাচমুত ত্বঃ শৃণ্বন্ন শৃণোত্যেনাম্। উতো ত্বস্মৈ তন্বংবি সস্রে  জায়েব পত্য উশতী সুবাসাঃ।। উত ত্বং সখ্যে স্থিরপীতমাহুর্নৈনং হিন্বন্ত্যপি বাজিনেষু। অধেন্বা চরতি মায়য়ৈষ  বাচং শুশ্রুবাঁ অফলামপুষ্পাম্।। (ঋগ্বেদ সংহিতা: ১০.৭১.৪-৫) "বেদবিদ্যার জ্ঞান অনেকে দেখেও দেখতে পায় না, শুনেও শুনতে পায় না, একমাত্র যিনি যোগ্য অধিকারী হিসেবে বৈদিক পথে অগ্রসর হয়, সেই যোগ্য অধিকারীর কাছেই বেদবিদ্যা স্বমহিমায় প্রকাশিত হয়; যেমন করে প্রেমপরিপূর্ণা স্ত্রী একমাত্র তার স্বামীর কাছেই নিজদেহ প্রকাশিত করে। যিনি বেদবিদ্যা লাভ করেন তিনি সমাজে সম্মানিত হন; পক্ষান্তরে যারা বেদবিদ্যা ছেড়ে পুষ্পফলবিহীন অসার বাক্যের মোহময় পথে অগ্রসর হয়, তারা দুগ্ধহীন কাল্পনিক মায়াময় গাভীর পিছনে ছুটে শুধুমাত্র নিজের জীবনকেই ধ্বংস করেন।" বেদ মন্ত্রেই বলা হয়েছে,  বেদবিদ্যার জ্ঞান সকলে দেখেও দেখতে পায় না, শুনেও শুনতে পায় না। বিবিধ  সাধনের ফলে  একমাত্র যিনি যোগ্য অধিকারী,  তিনিই বৈদিক পথে অগ্রসর হয়ে অনন্ত বেদের জ্ঞানরাশিকে কিছুটা জানতে পারেন। শুধু সেই পুণ্যবান যোগ্য  অধিকারীর কাছেই বেদবিদ্যা স্বমহিমায় নিজেকে প্রকাশিত করেন। অনধিকারী কখনই বৈদিক হিরন্ময় জ্ঞানরাশির সন্ধান পান না। অধিকারী হতে হলে তাকে বেদান্ত চর্চা, নিষ্কাম কর্ম, ইন্দ্রিয় সংযম, সত্ত্বগুণের অভ্যাস, নিত্য এবং নৈমিত্তিক উপাসনা, প্রায়শ্চিত্ত বোধ, সর্বদা ব্রহ্মানুভূতি বেদান্তের এ সকল মূখ্যবিষয়ের অভ্যাস এবং অনুশীলন সর্বদা নিরবচ্ছিন্নভাবে করতে হয়। তবেই দেহের মধ্যেই অবস্থিত মুক্তির অশ্বত্থবৃক্ষটি ধীরেধীরে বিস্তার লাভ করে অনন্তে যুক্ত হবে। তিনি নির্মল এবং শান্ত হবেন।তাই আজও কাউকে জ্ঞানদানের পূর্বে অধিকারী নিরুপণ করে নিতে হয়। অধিকারী বিহীন জ্ঞান ফলবতী হয় না। একারণেই বেদান্তের অধিকারী বিহীন অযোগ্য পাত্রে বিতরণ করতে শাস্ত্রে নিষেধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বেদান্তের নিগূঢ়তম জ্ঞান শুধু যোগ্য শিষ্য এবং যোগ্য সন্তানকেই দিতে। সকল শিষ্য অথবা সকল সন্তানই নিগূঢ় বৈদান্তিক জ্ঞানের যোগ্য নয়। বেদে দুই প্রকারের জ্ঞানের কথা আছে, জাগতিক যা অভ্যুদয় দান করে এবং নিঃশ্রেয়স যা মুক্তির পথে নিয়ে যায়। জাগতিক বা আভ্যুদয়িক জ্ঞান সকলকেই দেয়া যায়। কিন্তু মুক্তি বা মোক্ষের পথের নিঃশ্রেয়স জ্ঞান সকলের জন্য নয়, শুধুই যোগ্য অধিকারীর জন্য।তাই অধিকারী সম্পর্কে শাস্ত্রে বলা আছে : অধিকারী তু বিধিবৎ-অধীতবেদবেদাঙ্গত্বেন আপাততঃ  অধিগত-অখিল-বেদার্থঃ অস্মিন্ জন্মনি জন্মান্তরে বা  কাম্যনিষিদ্ধবর্জনপুরঃসরং নিত্য-নিমিত্তিক-প্রায়শ্চিত্ত -উপাসনা-অনুষ্ঠানেন নির্গত-নিখিল-কল্মষতয়া  নিতান্ত-নির্মল-স্বান্তঃ, সাধনচতুষ্টয়সম্পন্নঃ প্রমাতা। (বেদান্তসার:৬) "বেদান্তের অধিকারী তাঁকেই বলা হয়, যিনি এজন্মে বা আগেকার পূর্ববর্তী জন্মে বিধিপূর্বক বেদবেদান্ত পাঠ করে মোটামুটি অর্থ বুঝেছেন, কাম্য-কর্ম ও শাস্ত্র-নিষিদ্ধ কর্ম ত্যাগ করে নিত্য নৈমিত্তিক, প্রায়শ্চিত্ত ও উপাসনা করে সকল পাপ দূর করে অত্যন্ত নির্মল চিত্তের অধিকারী হয়ে চারটি সাধনকে অবলম্বন করেছেন।" অধিকারীর ব্রহ্ম বা বেদান্তের প্রতি আগ্রহ তখনই জন্মাবে, যখন ভাল করে তিনি বেদ-বেদান্তের মাহাত্ম্য নিজ অন্তরে উপলব্ধি করবেন। প্রথমেই বেদ-বেদান্ত সবকিছু আপনার ভাল করে পড়তে হবে,জানতে হবে।এর পরবর্তীতে নিত্য নৈমিত্তিক যে দায়িত্ব তা নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হবে। তবেই সে বৈদিক জ্ঞানকে ধীরেধীরে হৃদয়ে উপলব্ধি করতে পারবে। বেদ শুধুমাত্র কিছু শব্দরাশি নয়, এক অতীন্দ্রিয় অপৌরুষেয় জ্ঞানরাশি। কোন মনুষ্য এ জ্ঞান সৃষ্টি করেননি। ঋষিরা ধ্যানের গভীরে পেয়েছেন এ জ্ঞানকে। তাই অতীন্দ্রিয় অপৌরুষেয় জ্ঞানরাশির বেদজ্ঞানকে উপলব্ধি করতে হলে, জাগতিক ইন্দ্রিয়কেও প্রথমে অতীন্দ্রিয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে। তবেই বেদমাতা তার কাছে ধরা দিবেন।ফলশ্রুতিতে তিনি কিছুটা হলেও বেদকে উপলব্ধি করতে পারবেন। শ্রীকুশল বরণ চক্রবর্ত্তী সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।
বেদের জ্ঞান সবাই ধারণ করতে পারেননা, যদি সে যোগ্য অধিকারী না হয়। যিনি অধিকারী তাঁর কাছে বেদমাতা স্বয়ং প্রকাশিত হন এবং তাকে মহিমান্বিত করেন। অনেকেই বেদকে কোরান বা বাইবেল সহ অন্য ধর্মগ্রন্থের মত একটি গ্রন্থ মনে করেন। কিন্তু বেদের চর্চা না থাকার কারণে তাদের অধিকাংশই জানেন না যে, বেদ নামের গ্রন্থটি অসংখ্য গ্রন্থের সমষ্টি। জাগতিক আধ্যাত্মিক বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়ের উপরে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রন্থাগার। মানবজাতির জ্ঞানজগতের চিকিৎসাবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যকরণ, ছন্দ, যুদ্ধবিদ্যা, স্থাপত্যবিদ্যা, সংগীত, পারিবারিক আইন, রাষ্ট্রীয় সামাজিক আইন, জ্যামিতি, বিভিন্ন বিধিব্যবস্থা, মাঙ্গলিক লোকাচার, আধ্যাত্মিক জ্ঞান, আত্মতত্ত্ব সহ প্রত্যেকটি বিষয়ের উপরে আলাদা আলাদা গ্রন্থ আছে। আকারে প্রকারে এবং বিষয়বস্তুগত বৈচিত্র্যময়তার কারণে অনেকেই বেদ বুঝতে পারেন না। আবার অনেক গ্রন্থ হওয়ার কারণে কোথা থেকে শুরু করবেন তাও বুঝতে পারেন না। বেদ বুঝতে হলে প্রথমত তাঁকে অধিকারী হতে হবে। সেই ব্যক্তিই অবশ্যই এ জন্মে তো বটেই, পূর্ববর্তী জন্মেরও সুকৃতি থাকতে হবে। এ সুকৃতি না থাকলে, সে বেদের জ্ঞান কখনই উপলব্ধি করতে পারবে না।
গুরুমুখী পরম্পরাগত শিক্ষার মাধ্যমেই বেদের জ্ঞানের আবহমানকাল থেকেই চর্চা হয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে সেই গুরুমুখী শিক্ষা পরম্পরার ছেদ হয়ে যাওয়ায় আমরা অনেকেই আজ বেদ পড়েও বুঝতে পারি না। এরপরেও আমাদের বেদের পথে ফিরতে হবে। কারণ, বেদের উপরেও সনাতন ধর্ম ও সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত। বেদের পথে চলার বিষয়টি বেদমন্ত্রেই খুব সুন্দর করে উপমা দিয়ে বলা আছে। সেখানে বলা আছে, যারা বেদবিদ্যা ছেড়ে পুষ্পফলবিহীন অসার বাক্যের মোহময় পথে অগ্রসর হয়, তারা দুগ্ধহীন কাল্পনিক মায়াময় গাভীর পিছনে ছুটে শুধুমাত্র নিজের জীবনকেই ধ্বংস করেন।
উত ত্বঃ পশ্যন্ন দদর্শ
বাচমুত ত্বঃ শৃণ্বন্ন শৃণোত্যেনাম্।
উতো ত্বস্মৈ তন্বংবি সস্রে
জায়েব পত্য উশতী সুবাসাঃ।।
উত ত্বং সখ্যে স্থিরপীতমাহুর্নৈনং
হিন্বন্ত্যপি বাজিনেষু।
অধেন্বা চরতি মায়য়ৈষ
বাচং শুশ্রুবাঁ অফলামপুষ্পাম্।।
(ঋগ্বেদ সংহিতা: ১০.৭১.৪-৫)
"বেদবিদ্যার জ্ঞান অনেকে দেখেও দেখতে পায় না, শুনেও শুনতে পায় না, একমাত্র যিনি যোগ্য অধিকারী হিসেবে বৈদিক পথে অগ্রসর হয়, সেই যোগ্য অধিকারীর কাছেই বেদবিদ্যা স্বমহিমায় প্রকাশিত হয়; যেমন করে প্রেমপরিপূর্ণা স্ত্রী একমাত্র তার স্বামীর কাছেই নিজদেহ প্রকাশিত করে।
যিনি বেদবিদ্যা লাভ করেন তিনি সমাজে সম্মানিত হন; পক্ষান্তরে যারা বেদবিদ্যা ছেড়ে পুষ্পফলবিহীন অসার বাক্যের মোহময় পথে অগ্রসর হয়, তারা দুগ্ধহীন কাল্পনিক মায়াময় গাভীর পিছনে ছুটে শুধুমাত্র নিজের জীবনকেই ধ্বংস করেন।"
বেদ মন্ত্রেই বলা হয়েছে, বেদবিদ্যার জ্ঞান সকলে দেখেও দেখতে পায় না, শুনেও শুনতে পায় না। বিবিধ সাধনের ফলে একমাত্র যিনি যোগ্য অধিকারী, তিনিই বৈদিক পথে অগ্রসর হয়ে অনন্ত বেদের জ্ঞানরাশিকে কিছুটা জানতে পারেন। শুধু সেই পুণ্যবান যোগ্য অধিকারীর কাছেই বেদবিদ্যা স্বমহিমায় নিজেকে প্রকাশিত করেন। অনধিকারী কখনই বৈদিক হিরন্ময় জ্ঞানরাশির সন্ধান পান না। অধিকারী হতে হলে তাকে বেদান্ত চর্চা, নিষ্কাম কর্ম, ইন্দ্রিয় সংযম, সত্ত্বগুণের অভ্যাস, নিত্য এবং নৈমিত্তিক উপাসনা, প্রায়শ্চিত্ত বোধ, সর্বদা ব্রহ্মানুভূতি বেদান্তের এ সকল মূখ্যবিষয়ের অভ্যাস এবং অনুশীলন সর্বদা নিরবচ্ছিন্নভাবে করতে হয়। তবেই দেহের মধ্যেই অবস্থিত মুক্তির অশ্বত্থবৃক্ষটি ধীরেধীরে বিস্তার লাভ করে অনন্তে যুক্ত হবে। তিনি নির্মল এবং শান্ত হবেন।তাই আজও কাউকে জ্ঞানদানের পূর্বে অধিকারী নিরুপণ করে নিতে হয়। অধিকারী বিহীন জ্ঞান ফলবতী হয় না। একারণেই বেদান্তের অধিকারী বিহীন অযোগ্য পাত্রে বিতরণ করতে শাস্ত্রে নিষেধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বেদান্তের নিগূঢ়তম জ্ঞান শুধু যোগ্য শিষ্য এবং যোগ্য সন্তানকেই দিতে। সকল শিষ্য অথবা সকল সন্তানই নিগূঢ় বৈদান্তিক জ্ঞানের যোগ্য নয়। বেদে দুই প্রকারের জ্ঞানের কথা আছে, জাগতিক যা অভ্যুদয় দান করে এবং নিঃশ্রেয়স যা মুক্তির পথে নিয়ে যায়। জাগতিক বা আভ্যুদয়িক জ্ঞান সকলকেই দেয়া যায়। কিন্তু মুক্তি বা মোক্ষের পথের নিঃশ্রেয়স জ্ঞান সকলের জন্য নয়, শুধুই যোগ্য অধিকারীর জন্য।তাই অধিকারী সম্পর্কে শাস্ত্রে বলা আছে :
অধিকারী তু বিধিবৎ-অধীতবেদবেদাঙ্গত্বেন আপাততঃ
অধিগত-অখিল-বেদার্থঃ অস্মিন্ জন্মনি জন্মান্তরে বা
কাম্যনিষিদ্ধবর্জনপুরঃসরং নিত্য-নিমিত্তিক-প্রায়শ্চিত্ত
-উপাসনা-অনুষ্ঠানেন নির্গত-নিখিল-কল্মষতয়া
নিতান্ত-নির্মল-স্বান্তঃ, সাধনচতুষ্টয়সম্পন্নঃ প্রমাতা।
(বেদান্তসার:৬)
"বেদান্তের অধিকারী তাঁকেই বলা হয়, যিনি এজন্মে বা আগেকার পূর্ববর্তী জন্মে বিধিপূর্বক বেদবেদান্ত পাঠ করে মোটামুটি অর্থ বুঝেছেন, কাম্য-কর্ম ও শাস্ত্র-নিষিদ্ধ কর্ম ত্যাগ করে নিত্য নৈমিত্তিক, প্রায়শ্চিত্ত ও উপাসনা করে সকল পাপ দূর করে অত্যন্ত নির্মল চিত্তের অধিকারী হয়ে চারটি সাধনকে অবলম্বন করেছেন।"
অধিকারীর ব্রহ্ম বা বেদান্তের প্রতি আগ্রহ তখনই জন্মাবে, যখন ভাল করে তিনি বেদ-বেদান্তের মাহাত্ম্য নিজ অন্তরে উপলব্ধি করবেন। প্রথমেই বেদ-বেদান্ত সবকিছু আপনার ভাল করে পড়তে হবে,জানতে হবে।এর পরবর্তীতে নিত্য নৈমিত্তিক যে দায়িত্ব তা নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হবে। তবেই সে বৈদিক জ্ঞানকে ধীরেধীরে হৃদয়ে উপলব্ধি করতে পারবে। বেদ শুধুমাত্র কিছু শব্দরাশি নয়, এক অতীন্দ্রিয় অপৌরুষেয় জ্ঞানরাশি। কোন মনুষ্য এ জ্ঞান সৃষ্টি করেননি। ঋষিরা ধ্যানের গভীরে পেয়েছেন এ জ্ঞানকে। তাই অতীন্দ্রিয় অপৌরুষেয় জ্ঞানরাশির বেদজ্ঞানকে উপলব্ধি করতে হলে, জাগতিক ইন্দ্রিয়কেও প্রথমে অতীন্দ্রিয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে। তবেই বেদমাতা তার কাছে ধরা দিবেন।ফলশ্রুতিতে তিনি কিছুটা হলেও বেদকে উপলব্ধি করতে পারবেন।
সহকারী অধ্যাপক,সংস্কৃত বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ।
মন্তব্যগুলো দেখুনমন্তব্যগুলো লুকান🙁